মহাখালী কলেজ গেট সংলগ্ন বস্তির খালে বস্তাবন্দি একটা লাশ পাওয়া যায়। খণ্ডবিখণ্ড লাশ। কেউ লাশের হাত-পা-মাথা সুন্দর করে কেটে ট্যাগ করে রেখেছে। হাতের সাথে হাত লেখা ট্যাগ, পায়ের সাথে পা আর মাথার সাথে গোটা গোটা অক্ষরে লেখা মাথা। হাত-পা-মাথা সব একসাথে। পরিপাটি, পরিচ্ছন্ন, সাজানো গুছানো। লাশের পরিচয় পাওয়া যায়। মিথিলা ফারজানা। বনানী বিদ্যানিকেতনের ছাত্রী। ক’দিন পরই যার এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা। টুকরা-টাকরা দেহাংশের সাথে পাওয়া যায় ২৯টা লেজবিহীন টিকটিকি ও একটা ছোট্ট চিরকুট। চিরকুটে লেখা: লিজার্ড কিং ফিরে এসেছে মিথিলা ফারজানার ঘাড়ের পিছনে লেজহীন টিকটিকির ট্যাটু এঁকে রাখা, তার পিঠে বড় করে অচেনা ভাষায় একটা শব্দ লেখা: Πανδώρα ঘটনাচক্রে জড়িয়ে পড়ে মিথিলা ফারজানার দুই সহপাঠী লম্বু মুনীর শাফকাত ও ভোটকা অভিজিৎ কুণ্ডু। জড়িয়ে পড়ে দুই বান্ধবী আজমিন-অরিন ও চারপেয়ে এক জন্তু। কুট্টুস। এই চারমূর্তি কি পারবে মিথিলা ফারজানা হত্যা-রহস্য উদ্ঘাটন করতে? অন্ধকার টানেলে আলোর রেখা খুঁজে নিতে? নাকি নিকষ কালো আঁধার গ্রাস করে নিবে ওদের? রহস্যময় এ খুনের দায়িত্ব পায় গুলশান থানার চৌকস অফিসার ফজলে নূর। তদন্তে বেরিয়ে পড়ে একই ধাঁচে খুন হয়েছে আগেও। খণ্ডবিখণ্ড লাশ মিলেছে, চিরকুট মিলেছে। মিলেছে অচেনা ভাষার ঐ লেখাটাও: Πανδώρα কথাটার মানে কী? কী চায় এই খুনি? কেইবা এই লিজার্ড কিং? তবে কি সহস্রাব্দ-প্রাচীন গ্রিক মিথ প্যান্ডোরার বাক্সেই সব উত্তর রয়ে গেছে? বাক্স কি তবে খুলেই গেল?
জাহিদ হোসেনের জন্ম সিলেটে, বেড়ে উঠা ঢাকায়। পড়াশোনা করেছেন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। পেশায় ব্যাংকার হলেও বইপড়ার প্রতি অসম্ভব ঝেঁাক থেকেই লেখালেখিতে আগ্রহ। শুরু অনুবাদ দিয়ে। পরপর দু’টি অনুবাদ প্রকাশিত হয় তার। অ্যাম্বার রুম ও ম্যাক্সিমাম রাইডঃ দ্য অ্যাঞ্জেল এক্সপেরিমেন্ট। তারপর তিনি প্রবেশ করেন মৌলিক লেখালেখির জগতে। মৌলিক থ্রিলার হিসেবে তার প্রথম প্রয়াস ঈশ্বরের মুখোশ যা ২০১৫ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছিল। তারপর একে একে বের হয় ফিনিক্স, কাদ্যুসেয়াস, একজোড়া চোখ খেঁাজে আরেকজোড়া চোখকে, দুধ চা খেয়ে তোকে গুলি করে দেব, গিলগামেশ, ক্সনঋর্ত ও ইথাকা। শুধু উপন্যাস নয়, সম্প্রতি পরশুরামের কঠোর কুঠার নামে একটি গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তার। তার প্রকাশিত বই ওপার বাংলাতেও ব্যাপক সমাদৃত ও প্রশংসিত। কলকাতার অভিযান পাবলিশার্স ও বুকিকার্ট থেকে ইতিমধ্যে তার কয়েকটি বইয়ের ভারতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়ে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।