এই গ্রন্থের ভূমিকা পাঠক সমাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । কেননা , এখান থেকে আমরা জানতে পারবো আদিপর্ব থেকে বর্তমান কাল , নারীরা কোথায় কোন অবস্থানে ছিলেন এবং কেমন ছিল তাদের আর্থ - সামাজিক , পারিবারিক এবং রাষ্ট্রিক অধিকার । পলে পলে ক্ষণে ক্ষণে কোন দুঃসাহস তাকে পথ দেখিয়েছে , করেছে আলোর পথের অভিযাত্রিক । কেমন করে ভেঙেছেন চার পাশের সুকঠিন অচলায়তন । নারী জীবনের উন্মেষ , বিকাশ এবং ক্রমপরিণতি পুরোটাই পুরুষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়তো শাসিত । বধু - মাতা - কন্যা যে স্তরেই সে পৌঁছাক না কেন তার সর্বত্র পুরুষের পিঞ্জর । কোন অবস্থাতেই নারী পরিপূর্ণ স্বাধীন বা মুক্ত নয় । যুগ যুগ ধরে চলে আসছে একই নিয়ম , একই প্রথা । এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ- আমাদের সমৃদ্ধ লোক সাহিত্য । এই অচলায়তন ভেঙে এর থেকে মুক্ত হবার উপায় খোঁজা হয়েছে বারবার । সফলতা - বিফলতা হেঁটেছে পাশাপাশি । তবে হাল ছাড়া হয়নি । উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে যে নব চেতনার সূত্রপাত হয় তা আজও বহমান স্রোতে প্রবাহিত । ঊনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বাঙালি নারীদের একটি অংশ শিক্ষা - দীক্ষা , সাহিত্য - সংস্কৃতি , সভা - সমিতি এবং সামাজিক অধিকার অর্জন করে এগিয়ে যায় । মধ্যযুগের কবি রহিমুন্নেসা থেকে সাহিত্যের যে ধারাবাহিকতা আসছিল সেটি তাহেরননেসা - ফয়জুন্নেসার হাত ধরে এগিয়ে আসে বেগম রোকেয়া এবং তাঁর সামসাময়িক লেখিকাদের কাছে ।