সান্ত্বনা মাস ১১ এর দিনলিপি : এক রাফির জীবনালেখ্য কোটি বছরের পুরানো পৃথিবীতে কতজন আসে যায়। নির্দিষ্ট সময়কালের জীবন যাপন শেষে অনন্তের পথে হয় তার যাত্রা। এটাই প্রকৃতির নিয়ম, অমোঘ বিধান। কিন্তু তা যখন স্বাভাবিকতায় ব্যত্যয় ঘটায় তখনই মেনে নেয়া বড় বেশি কষ্টদায়ক। আমাদের একমাত্র পুত্র সন্তান রাফি এই পৃথিবীর আলো-বাতাসে, হাসি-কান্না, দুঃখ-বেদনা, আদর-স্নেহে চার হাজার চারশ’ চুরানব্বই দিন কাটিয়ে সাজানো সকল স্বপ্নকে তছনছ করে চলে গেছে শেষ গন্তব্যে। রাফি-এ বিশাল পৃথিবীর লক্ষ কোটি মানুষের মধ্যে ছিল একটা ছোট্ট অস্তিত্ব। প্রাণ প্রাচুর্যে ভরা তার ছোট্ট জীবনে সে উপভোগ করেছে প্রকৃতির শ্যামলিমা, দিগন্ত বিস্তীর্ণ আকাশ-চন্দ্র তারকারাজি। ছোট্ট মনের কৌতূহলে কখনো হয়েছে উচ্ছ্বসিত। কখনো মৌন। অকস্মাৎ ছোট্ট এই ফুটফুটে জীবনে নেমে এলো মরণব্যাধি ‘লিউকেমিয়ার’ আঘাত। সমস্ত পরিবারে নেমে আসে বিষাদের ছায়া। আমরা বজ্রাহত, হতবাক। অনেক ঘাত প্রতিঘাত প্রতিকূল পরিস্থিতি কাটিয়ে চিকিৎসার সম্ভাব্য সর্বোন্নত সুযোগ গ্রহণ করেও পারলাম না রাফির ছোট্ট জীবনকে দীর্ঘায়িত করতে। তার জন্য নির্ধারিত সময়কালটুকুই সে কাটিয়ে গেলো। রাফির সংক্ষিপ্ত জীবনের কিছু বর্ণময় খ-চিত্র আমাদের নাড়া দেয়। হয়ত আপনাদেরও আন্দোলিত করবে। স্মৃতিময় ঘটনাসমূহের মধ্যে তার গুপ্ত জীবনাবেগ আপনারা প্রত্যক্ষ করবেন। তার সম্ভাবনাময় অসম্পূর্ণ জীবনের জন্যে তার কথা ভেবে হয়তো দু’ফোটা অশ্রু ঝরবে। হয়ত অলক্ষ্যে থেকে সে জানবে তার জন্য কেউ দোয়া করছে। এটুকুই হোক কামনা।