এই মহাবিশ্বের পশ্চিম প্রান্তে এক ছোট গুরুত্বহীন হলুদ সূর্যের অস্তিত্বের কথা শোনা যায়। এই গুরুত্বহীন সূর্যকে কেন্দ্র করে প্রায় ৯৮ মিলিয়ন মাইল দূর দিয়ে ঘুরছে এক নীল সবুজ গ্রহ। এই গ্রহের বাসিন্দারা সবসময় মন খারাপ করে বসে থাকে। তাদের দুঃখ দূর করার জন্য অনেকরকমের সমাধান প্রস্তাব করা হয়। তবে সব প্রস্তাবের সাথেই কাকতালীয়ভাবে কিছু কাগজের টুকরো আদান-প্রদানের কথা চলে আসে দেখে সেসব প্রস্তাব ধোপে টেকে না কারণ এই কাগজের টুকরোগুলোর আসলে তাদের সুখ বা আনন্দের সাথে তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। দুইহাজার বছর আগে এক লোক এসে বলছিলো পৃথিবীতে সুখী হওয়ার জন্য মানুষের উচিত মানুষকে সাহায্য করা। এই কথা বলার দায়ে তাকে গাছের সাথে পেরেক দিয়ে গেঁথে মেরে ফেলা হলো। কিন্তু তার মৃত্যুর দুই-হাজার বছর পরে কোনো এক বৃহস্পতিবারে রিক্সম্যানওয়ার্থ নামক এক জায়গায় এক মেয়ে কফি খেতে খেতে হঠাৎ মানবসভ্যতার সুখী হওয়ার রহস্য আবিষ্কার করে ফেলে। এবং তার আবিষ্কার করা পদ্ধতিটির মজা এখানেই যে এটা বাস্তবায়ন করতে কাউকে আবার গাছের সাথে পেরেক দিয়ে গেঁথে মেরে ফেলতে হবে না। দুঃখজনকভাবে সে এই পদ্ধতি কাউকে বলার আগেই এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে এবং সুখী হওয়ার সেই পদ্ধতি তার মাথা থেকে আজীবনের জন্য হারিয়ে যায়। এটা ওই মেয়ের গল্প না। এটা ওই ভয়াবহ দুর্ঘটনার গল্প এবং ওই দুর্ঘটনার ফলে কী কী হয়েছিলো তার গল্প। এটা একটা বইয়েরও গল্প। বইয়ের নাম দ্য হিচহাইকার’স গাইড টু দ্য গ্যালাক্সি।
১৯৫২ সালে ক্যামব্রিজে জন্মগ্রহণ করেন ডগলাস্ অ্যাডামস্। পড়াশােনা এসেক্সের ব্রেন্টউড স্কুল ও ক্যামব্রিজের সেন্ট জনস কলেজে। উচ্চতর পড়ালেখা করেন ইংরেজি নিয়ে। তার রচনার ধারা। আর সবার সাথে মিলবে না। একটু খেলাে, আবার একটু অন্য ধাতের। মনে হতে পারে তিনি তুলে আনছেন আয়েশি অর্থহীন কিছু রচনা, জালটা বিছানাের পর যখন গুটিয়ে আনেন, শিকড় উপড়ে ফেলেন পুরাে কাহিনীর। সবচে বিখ্যাত কাজ হিচহাইকারস গাইড টু দ্য গ্যালাক্সি সিরিজের বইগুলাে। ডার্ক জেন্টলি সিরিজও ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। প্রাণিবিজ্ঞানী মার্ক কারওয়ার্ডিনের সাথে লিখেছেন লাস্ট চান্স টু সি...। দ্য মিনিং অব লিফ ও দ্য ডিপার মিনিং অব লিফ লিখেছেন জন লয়েডের সাথে। ২০০১ সালে এ সাড়া জাগানাে লেখক মৃত্যুবরণ করেন।