কামরুল আহসানের জিজীবিষা উপন্যাসে সমাজের জটিল এক সংকট উঠে এসেছে। ঘটনার আকস্মিকতায় ঢাকার মেয়ে মিতুর সঙ্গে ফেসবুক মেসেঞ্জারে পরিচয় হয় নেদারল্যান্ডস প্রবাসী পাঞ্জাবি তরুণ শিখ কুলজিতের। সে স্বাধীনতাকামী আন্ডারগ্রাউন্ড দলের সদস্য। গুপ্তহত্যা থেকে জীবন বাঁচাতে পিতৃপুরুষের ভূমি ছেড়ে এসেছিল দিল্লি। স্থানীয় প্রভাবশালী নেতার লালসার শিকার একমাত্র ছোট বোনের অপমৃত্যুর বিচার চাইতে গিয়ে চক্রান্তের জালে জড়িয়ে দেশ ছাড়তে হয় তাকে। বেঁচে থাকার প্রবল আকাক্সক্ষা নিয়ে তাড়া খেয়ে বেড়ানো কুলজিত মিতুর মাঝে খুঁজে বেড়ায় ছোট বোন নিশাকে। এভাবে আঞ্চলিক রাজনীতির ঘটনা হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক। কাহিনি বর্ণনার সরলতা এই উপন্যাসের প্রাণ। কিন্তু ঘটনা ও চরিত্রের মনোজগতের স্বাভাবিক রূপান্তরের মধ্যে ব্যক্তির সংকট, বিষাদ ছুঁয়ে যাবে পাঠকের হৃদয়। একদিকে রহস্যের আভাস, অন্যদিকে অচেনা এক ভাইয়ের জন্য বোনের হৃদয়ের বেদনা উপন্যাসটিকে বিশেষত্ব দিয়েছে। প্রভাবশালীদের চক্রান্তে দেশ ছেড়ে পালিয়ে বেড়ানো স্বাধীনতাকামী এক যুবক কুলজিতের প্রাণে বাঁচার আকুলতা আর হাজার মাইল দূরে ভিনদেশি এক তরুণী মিতুর মাঝে হারিয়ে যাওয়া বোনকে খুঁজে পাওয়ার অভিলাষ প্রতিবিম্বিত হয়েছে জিজীবিষায়। মিতু কি দেখা পেয়েছিল কুলজিতের?