রবীন্দ্রনাথ ও শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির অহংকার। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির আত্মপ্রতিষ্ঠার প্রভাবক হিসেবে কাজ করেন। উভয়ে বাঙালির সাংস্কৃতিক সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেন এবং ইতিহাস-ঐতিহ্যকে বহির্বিশ্বে পরিচিত করানোর ক্ষেত্রে অবদান রাখেন। পাকিস্তান রাষ্ট্রের শাসকেরা বঙ্গবন্ধু এবং রবীন্দ্রনাথকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বারবার সরকারি গণমাধ্যমে তাঁদের বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়। আইন করে, ভীতি সৃষ্টি করে জনগণকে বঙ্গবন্ধু এবং রবীন্দ্রনাথ থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা ছিল। কিন্তু তাদের এই অপচেষ্টার ফল হয়েছে উলটো পাকিস্তানি শাসকেরা যতই শেখ মুজিবুর রহমান ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে জনগণের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চেষ্টা করেছে, ততই এঁদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। পূর্ব পাকিস্তান তথা পূর্ববঙ্গের মানুষ রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে জীবনের পাথেয় হিসেবে অনুসরণ করেছে। বঙ্গবন্ধু তাঁর রাজনৈতিক জীবনে রবীন্দ্রনাথকে আশ্রয় করেছেন। ব্যক্তিজীবনে তাঁর ছিল অগাধ রবীন্দ্রপ্রীতি। এই বইয়ে বঙ্গবন্ধু তাঁর ব্যক্তিজীবনে রবীন্দ্রনাথকে কীভাবে উপলব্ধি করেছেন, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা করা হয়েছে।
বিশিষ্ট কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও ফোকলােরবিদ ড. অনুপম হীরা মণ্ডলের জন্ম যশাের জেলার ছিয়ানব্বই অঞ্চলের প্রাণকেন্দ্র কুলটিয়া গ্রামে। সাহিত্য-সংস্কৃতির গবেষক হিসেবে তিনি ইতােমধ্যে সুধীসমাজে পরিচিতি অর্জন করেছেন। দীর্ঘদিন ফোকলাের নিয়ে গবেষণা করছেন। কবি ও সাহিত্যসমালােচক হিসেবেও তাঁর খ্যাতি রয়েছে। বাংলাসাহিত্যের বিভিন্ন ধারায় তাঁর রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা ১০। এর মধ্যে ‘বাংলাদেশের লােকধর্ম: দর্শন ও সমাজতত্ত্ব’, ‘ফকির লালন সাঁই: ভাব-সাধনা’, ‘বাংলার ভাবান্দোলন ও মতুয়া ধর্ম’, ‘ফোকলাের অনুষঙ্গ’, ‘লােকক্রীড়ার অন্তর্পাঠ' প্রভৃতি উল্লেখযােগ্য। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলাের বিভাগ থেকে স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং পিএইচডি উপাধি গ্রহণ করে এখন একই বিভাগে সহযােগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।