প্রথমেই সরল স্বীকারোক্তি : এই গ্রন্থের প্রত্যেক গল্পই সংগৃহীত। অধিকাংশই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে, গুটিকয়েক সংগ্রাহকের স্মৃতিশালা থেকে। গল্পগুলোর অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য কলেবর সর্বোচ্চ এক পাতা। প্রত্যেক গল্পের কলেবর কেবল ক্ষুদ্রই নয়, কোনো কোনো গল্প অতি ক্ষুদ্র। কিন্তু অতি ক্ষুদ্র গল্পটিরও তাৎপর্যপূর্ণ একটি বার্তা রয়েছে। আবার আকার ছোটো বিধায় পাঠকের পাঠে আরাম বোধ বৈ কোনো ক্লান্তি জাগবে না। গল্পগুলো নিঃসন্দেহে চমকপ্রদ, কৌত‚হলোদ্দীপক এবং তাৎপর্যপূর্ণ। গল্পগুলো পাঠককে হাসাবে না, ভাবাবে। উদ্দিষ্ট বার্তাটি খুঁজে পেতে পাঠককে কোনো কোনো গল্প হয়তো একাধিকবারও পড়তে হতে পারে। সকল গল্পই যদি আন্তর্জালে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সহজপ্রাপ্য, তাহলে গ্রন্থবদ্ধ করা হলো কেন? কারণ বইয়ের অনেক গল্প অনেকের পড়া থাকলেও, মোটামুটি নিশ্চিত করেই বলা যায়, কোনো পাঠকেরই এ বইয়ের সকল গল্প একসাথে বা আগে পড়া হয়নি। তাছাড়া যতই দাবি করা হোক না কেন, ভার্চুয়াল তথা অনলাইন মাধ্যমের চেয়ে এখনও মুদ্রিত কাগজপত্র তথা বইপুস্তকের স্বতন্ত্র ও বিশেষ একটি আবেদন ও উপযোগিতা আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। প্রায় সকল গল্পকেই সর্বজনীনতার বিষয়টি বিবেচনায় ভাষাগত এবং ভাবগত দিক থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী পরিমার্জন করা হয়েছে। প্রথাগত ‘মোরাল অব দ্য স্টোরি’ আকারে গল্পগুলোর বার্তা প্রথমেই দেওয়া হয়নি, যেন পাঠক নিজেই দুই-একবার ভাবেন। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বার্তাগুলো ‘ইঙ্গিত-উন্মেষ’ শিরোনামে গ্রন্থের শেষ দিকে গল্পের ক্রমিক অনুযায়ী উল্লেখ করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক বা আনুষ্ঠানিক ও সুশীল তর্ক-বিতর্ক, আড্ডাকে সমৃদ্ধ করতে গল্পগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। বিশেষত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্যও বইটি খুব উপকারী হতে পারে। ব্যবহারিক উদ্দেশ্যের পাশাপাশি আত্মসমৃদ্ধির লক্ষ্যেও সংকলনটি সংগ্রহে রাখার যোগ্য।