পৃথিবীর সবচেয়ে রূপবতি মেয়েটি জহিরকে তার সাথে জ্যাৎস্না দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এই আমন্ত্রণ উপেক্ষা করার ক্ষমতা তার নাই। জহির শফিক স্যারের বাড়ি থেকে দৌড়ে বেড়িয়ে গেল। শফিক স্যারও ছুটল জহিরের পিছে পিছে। এই জহির ভাই, দাঁড়ান। কই যাইতাছেন? জহির বলল, পরীর কাছে। --কী বলেন? কিছুই তো বুঝি না। আমার বাসায় থাকবেন না? --একটা পরী আমাকে আজ রাতে তার সাথে জ্যোৎস্না দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আজ সারারাত আমি তার সাথে জ্যোৎস্না দেখবো। শফিক স্যার অবাক হয়ে বললেন, কী বলেন এইসব আবোলতাবোল। দাঁড়ান তো ভাই। --দাঁড়ানোর সময় নাই। আপনি বাসায় চলে যান। কাল সন্ধ্যায় ইউসুফ কাকার বাসায় চলে আসবেন। পরীর সাথে আমার বিয়ে হবে। শফিক স্যার দাঁড়িয়ে গেল। এই ছেলের মনে হয় মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এর পিছনে দৌড়ানোই বৃথা। কী সব আবোলতাবোল বলছে। পরীর সাথে আবার কারও বিয়ে হয় নাকি? বিয়ে হলে মানুষের সাথে হবে। পরীর সাথে কেন? জহির দৌড়াচ্ছে। প্রাণপণে ছুটছে সে। চাঁদের আলোয় রাস্তাঘাট ঝকমক করছে। তার দৌড়াতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। হঠাৎ সে তার সামনে দুইটা ছায়ামূর্তি দেখতে পেল। জহির চমকে দাঁড়িয়ে গেল। ছায়ামূর্তি দুইজন আরও কাছে এসে স্পষ্ট হল। কালো চাদরে তাদের শরীর ঢেকে রাখা। মাফলার দিয়ে মুখও ঢাকা। শুধু চোখ দেখা যাচ্ছে। মাফলার দিয়ে মুখ ঢেকে রাখায় জহির তাদের চিনতে পারল না। জহির বলল, আপনারা কারা? পথ আগলে দাঁড়ালেন কেন? লোক দুইজন কোনো উত্তর দিল না। সামনেরজন পিছনেরজনকে ইশারা করতেই সে কালো চাদরের ভিতর থেকে ধারালো ছুঁড়ি বের করল। চাঁদের আলোয় সেই ছুঁড়ি ঝিকমিক করে উঠল।
বইয়ের মলাটে মুহাম্মাদ ইব্রাহীম নাম ব্যবহার করলেও পাঠকরা তাকে চিনে "কবি সাহেব" নামে। তিনি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি মৌলিক গোয়েন্দা সিরিজ রচনা করে চেলেছেন, যা পাঠক মহলে তাকে "কবি সাহেব" ছদ্মনামে ব্যাপক পরিচিতি এনে দিয়েছে। কারণ তার গোয়েন্দা চরিত্রটির নামও যে "কবি সাহেব"। "দিঘির জলে চাঁদের ছায়া" তার প্রথম প্রকাশিত বই। প্রকাশিত হয় ২০১৬ সালের একুশে বইমেলায়। এখন পর্যন্ত তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা আট। মুহাম্মাদ ইব্রাহীমের জন্ম শরীয়তপুর জেলায় হলেও শৈশব, কৈশোর এবং বর্তমান সবই নারায়ণগঞ্জ। মাত্র এগারো বছর বয়সে পবিত্র কুরআন মুখস্ত করার গৌরব অর্জন করেন। এরপর নারায়ণগঞ্জ ইসলামিয়া ডিগ্রী মাদ্রাসা থেকে দাখিল এবং নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন।