সোহান-তিন্নির বিয়ের বয়স তিন বছর পার হতে চলল। এখনো তারা নিঃসন্তান দম্পতি। সোহানের Azoospermia (অ্যাজোস্পার্মিয়া)। চিকিৎসাব্যবস্থায় ব্যর্থ হয়ে আলোকে দত্তক নেই ওরা। দুর্ভাগ্যক্রমে আলো special child হয়ে বড় হতে থাকে। মাতৃত্বের ভালোবাসায় নিজের চাকরি ছেড়ে দিয়ে আলোর সেবায় দিন-রাত চলে যায় তিন্নির। আলো কি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবন পাবে? তিন্নি কি আর মা হতে পারবে? 'দত্তক’ গল্পটি এমন অনেক প্রশ্ন উত্তরের সাথে এগোতে থাকে । বেসরকারি হাসপাতালে রোগী মারা গেলে শুরু হয় রোগীর স্বজনদের আক্রমণ, হামলা। এমনকি এতে চিকিৎসকেরও অপমৃত্যু হয়। হাসপাতালে রোগী মারা যান শুধু চিকিৎসকেরই ভুলে, নাকি রোগীর শরীরের ভিতরের অন্য কোনো জটিলতায়? 'আমি সবই জানি' গল্পটা এমনই। নীলিমার বিয়ের দিনে হবুজামাই একাকী কথা বলতে চাই নীলিমার সাথে। ওরা ছাদে কথা বলার সময় মোহনা নামে তিন বছরের মেয়ে পিছন থেকে 'মা মা' বলে ডাকতে থাকে। যাকে ছাদের চিলেকোঠায় আটকে রাখা হয়েছিল। বরপক্ষ জানে না যে, নীলিমা বাচ্চাসহ বিয়ের পিড়িতে বসতে চাচ্ছে। অথচ বাচ্চাটা নীলিমার না। নীলিমা কিছু লুকাচ্ছে কি? নীলিমার বিয়ে হবে তো? ঘটনাগুলো ঘটতে থাকে ‘আজ নীলিমার বিয়ে' গল্পে। অনেক মেধাবী ছাত্র ছাত্রী মেডিকেল কলেজে পড়তে এসে প্রতি ব্যাচে কেউ না কেউ পড়ালেখার চাপে মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ে। সবাই তখন ওকে ‘পাগল' বলে সম্বোধন করে। জন ও তাদের মতো একজন। 'ফেরারি স্বপ্ন' গল্পে জন পড়ালেখা শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যেতে পারবে তো? হাতুড়ি-বাটাল দিয়ে মুখের অবয়ব তৈরি করার সময় ঠোঁট বানাতে গিয়ে হাতুড়ির বাড়ি বাটালে লাগতেই রুশোর ঠোঁট গলে রক্ত বেরিয়ে আসে। অথচ মুখে কোনো হাতুড়ির আঘাতই লাগেনি। কাঠের মূর্তি বানাতে গিয়ে এমন অলৌকিক ঘটনার শিকার হয় 'অভিশপ্ত মূর্তি' গল্পে। কিসের অভিশাপে এমন শাস্তি রুশোর? এমনই অনেকগুলো রোমাঞ্চকর, রোমান্টিক এবং সমসাময়িক জীবনমুখী ঘটনা নিয়ে রচিত হয়েছে গল্পগ্রন্থ ‘দত্তক' বইটি। প্রিয় পাঠকগণের হাতে গল্পগুলো বই আকারে তুলে দিতে পেরে প্রকাশনী লিপিকরকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
জন্ম ১৯৮১ সালের ৭ই মার্চ। নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর থানার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের মহিশো গ্রামে। স্থানীয় সাদাপুর খড়িবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেধাতালিকায় স্থান সহ কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাস করে রাজশাহী নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে এখন বি এস এম এম ইউ তে স্নাতকোত্তরে অধ্যায়নরত। নবম শ্রেণীতে পড়াশোনা করা অবস্থায় বাংলাদেশ বেতারে নাটক রচনা প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত হয় । প্রথমআলো বন্ধু সভায় অনেকদিন লেখালেখিতে জড়িত ছিলেন । তিনি দেশি-বিদেশি পত্রপত্রিকা ও জার্নালে অনেক প্রবন্ধ ও অন্যান্য লেখা লিখছেন । তার প্রতিটি লেখা স্বাতন্ত্র চিহ্নিত , অভিনব বিষয়বস্তু নিয়ে। প্রতিটি লেখায় সমাজ সংস্কারের জন্য এক একটি করে মেসেজ থাকে। তার লিখিত বইগুলোর মধ্যে- নির্বাসিত নরকে (উপন্যাস ) , দত্তক (গল্পগ্রন্থ) , নীল কাঁকড়া ( থ্রিলার) আমায় রেখো প্রিয় প্রহরে (উপন্যাস) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । লেখালেখির স্বীকৃতি হিসেবে স্বাধীনতা স্মৃতি পদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বঙ্গসভা পুরস্কার , বাংলাভিশন ফাউন্ডেশন হতে নজরুল পদক পুরস্কারে ভূষিত হন । দুই ছেলে আহনাফ , আরহাম, এক মেয়ে আইজাহ্ ও স্ত্রী আসমাউল হুসনা পূর্নিকে নিয়ে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বাস করেন।