ভাবের বিষয়কে ভাষায় এবং ভাব ও ভাষাকে বিশ্বমানবের ও ধ্রুপদী করে তোলাই সাহিত্যের অন্যতম কাজ। চিরকালীন সাহিত্যের মধ্যে কাব্যসাহিত্যই হচ্ছে মৌলিক নির্যাস। যে মৌলিক নির্যাসে কাব্যসাহিত্য রচিত হয় তার নান্দনিক প্রকাশে কল্পনাশক্তি দেখাবার দক্ষতা, অনুভূতি ও অভিজ্ঞতার স্বতঃস্ফূর্ততা থাকা অনিবার্য। ড. নাঈমা খানমের কবিতায় এর প্রতিফলন লক্ষ্যণীয়। নাঈমা একজন ভাববাদী মানুষ। তিনি ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী এবং পারিবারিকভাবে বড় হয়েছেন শিক্ষা এবং শিল্প-সাহিত্যের আবহে। সেখানেই তার ভাবনার অংকুরোদ্গম। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অনেক প্রথিতযশা কবি ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র ছিলেন, যারা পাশ্চাত্যের আধুনিক কাব্য ধারার মাত্রা আমাদের সাহিত্যে যুক্ত করেছেন, যেমন বুদ্ধদেব বসু, জীবনানন্দ দাশ, শামসুর রাহমান প্রমুখ। সম্ভবত এসব কবিগণ নাঈমা খানমকে বিশেষ অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। 'আকাশ পালানো শাড়ি নাঈমার তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ। স্বদেশ, মুক্তিযুদ্ধ, প্রকৃতি, প্রেম, ভালোবাসা, কল্পনা, বিমূর্ত ধারণা, স্বপ্ন, পরিবেশ, আনন্দ, বেদনা এরূপ নানা বিষয় নিয়ে সত্তুরটি কবিতা রয়েছে এ কাব্যগ্রন্থে। মূলত মৌলিক অনুভূতির ওপর ভর করে বিচিত্র রস, আঙ্গিক গঠনের মধ্য দিয়ে জীবনের চিত্রবিচিত্র বিষয়াবলি নান্দনিক সৃজনী শক্তির পরিস্ফুটনে ড. নাঈমার 'আকাশ পালানো শাড়ি’ কাব্যগ্রন্থটি আত্মপ্রকাশ করেছে। আমি কাব্যগ্রন্থটির বহুল প্রচার ও কাটতি প্রত্যাশা করি এবং এর প্রণেতা ড. নাঈমাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই।