উইল ও অ্যারিয়েল ডুরান্ট রচিত এগারো খণ্ডের ‘সভ্যতার কাহিনি’ ধ্রুপদী ইতিহাস-সাহিত্যের মর্যাদা লাভ করেছে। সভ্যতার ইতিহাস-পাঠকের জন্য এই বিপুল-আয়তনের পুস্তকরাজি পাঠ করা আবশ্যিক বিবেচিত হলেও তা হয়ত সম্ভব হয় না সময়াভাবে অথবা সকল কালের ইতিহাস সম্পর্কে সম-আগ্রহের অভাবের কারণে। তার একটি সমাধান দিয়েছেন লেখকদ্বয়। তাঁরা পুস্তকগুলোর সারৎসার তুলে ধরেছেন হাল-পুস্তক ‘ইতিহাসের শিক্ষা’য়। এটি ক্ষুদ্রায়তনিক একটি পুস্তক। এতে ইতিহাসকে কালপর্বে নয়, বিভিন্ন ঐতিহাসিক কার্য-কারণ সূত্রে এবং থিমে ভাগ করে বিন্যস্ত এবং উপস্থাপন করা হয়েছে-উদাগরণত, ‘জীববিজ্ঞান ও ইতিহাস’. ‘অর্থনীতি ও ইতিহাস’, ‘ধর্ম ও ইতিহাস’, ‘যুদ্ধ ও ইতিহাস’ ইত্যাদি, ইত্যাদি। তেরটি অধ্যায় বা বলা চলে, প্রবন্ধে লেখখকদ্বয় ইতিহাসের পেছনে যে বস্তুগত ও ধারণাগত শক্তি, প্রবণতা, গতিধারা ক্রিয়াশীল ছিল এবং এখনো আছে, তা তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতিহাসের পেছনে একক কোনো ছন্দ বা প্যাটার্ন বা শক্তি, যেমন অর্থনৈতিক কারণ, বা রাজনৈতিক কারণ, বা কোনো ক্যারিশমেটিক ব্যক্তিত্বের ভ‚মিকা কাজ করেনি, বরং তা যে বিভিন্ন প্রবণতা, বস্তুগত ও মানসিক শক্তির মিথস্ত্রিয়ায় অগ্রসর ও পরিবর্তিত হয়েছিল, তা-ই তুলে ধরেছেন ঐতিহাসিকদ্বয়। এই পুস্তকটি সাধারণ পাঠকের আগ্রহের কারণ ঘটাবে বলে আমাদের বিশ্বাস; সেইসঙ্গে যদি তা উইল ও অ্যারিয়েল ডুরান্টের মূল পুস্তকসমূহ পাঠ করার আগ্রহ জোগায় তবে আমাদের বিশ্ব-ইতিহাসের পাঠ নতুন মাত্রা পাবে বলে আমরা আনন্দলাভ করতে পারি।