ফ্ল্যাপের লেখাঃ এই কাহিনি যেন কবি কালিদাসের মেঘদূত কাব্যেরবিপরীত এক নির্মাণ। খরা, জলের অভাবে আমার দেশ নিরন্তন দগ্ধ হয়। সেই কাহিনি এখানে এসেছে রূপক হয়ে। মেঘের অভাব জ্ঞানের অভাব। সৃজন কাল বন্ধ্যা হয়ে থাকে। দেশ তার ভিতরে পোড়ে। ক্ষমতা কীভাবে মানুষকে অন্ধকারে ঠেলে নিরন্তর, এই উপন্যাস সেই কথাও খুঁজে বের করতে চেয়েছে। ২০০৬ সালে এই উপন্যাস সাহিত্যিক আকাদেমি সাহিত্য পুরষ্কার পেয়েছে। ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত উপন্যাস অশ্বচরিত তথাগত বুদ্ধের ঘোড়া কন্থক ও তার সারথী ছন্দকের কাহিনি। তারা এই আড়াই হাজার বছর ধরে অপেক্ষা করছে রাজপুত্রের প্রত্যাবর্তনের জন্য। এতদিনে এই পৃথিবী হিংসায় পরিপূর্ণ। বঙ্গোপসাগরের তীরে দীঘার ছোট এক হোটেলের খরিদ্দার সংগ্রহকারী ভানুদাস নিজেকে বলে ছন্দক। হোটেলওয়ালার টাট্টু ঘোড়ার পালক সেই ভানুদাস ঘোড়াটিকে বলে কন্থক। বৈশাখী পূর্ণিমার রাতে ঘোড়াটি পালায়। ভানুদাস সেই ঘোড়ার খোঁজে যায় চারদিকের গ্রামে গ্রামে, হাটে হাটে। রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে কোথায় না? এই উপন্যাস সময় থেকে সময়ান্তরে যাত্রা করেছে বারে বারে। তথাগত বুদ্ধের সময় থেকে হিংসাদীর্ণ এই সময়ে। সেই ঘোড়াটিও পালাতে পালাতে শেষ পর্যন্ত যেন হিরোসিমায় গিয়ে কালো বৃষ্টির ভিতরে গিয়ে পড়ে। লেখক ভারতীয় প্রতিবেশে জাদু বাস্তবতার ব্যবহার করেছেন এই উপন্যাসে। ঘোড়াটি প্রতি আশ্বিনে পালাত। এইবার পালিয়েছে বৈশাখে। প্রকৃতি একদিনেই দুই ঋতু যেন পার হয়ে গিয়েছিল। এই উপন্যাসের কোনো শেষ নেই যেন। চলতেই থাকে। অশ্বচরিত বাংলা উপন্যাসে এক আলাদা রীতির জন্ম দিয়েছে যেন। লেখক হিংসা আর মৃত্যুর বিপক্ষে জীবনের কথা শুনিয়েছেন। পরমাণু অস্ত্রের বিপক্ষে কথা বলেছেন।