পৃথিববীর সবচেয়ে আলোচিত শিশু শেখ রাসেল। তাকে নিয়ে যত গল্প, কবিতা, ছড়া ও গান লেখা হয়েছে সম্ভবত পৃথিবীর আর কোনো শিশুকে নিয়ে এত কিছু লেখা হয়নি। এর কারণ হলো শিশু রাসেলের কথা মনে হলেই চোখে ভেসে ওঠে নিষ্পাপ, প্রাণবন্ত এক শিশুর মুখ যাকে মাত্র ১১ বছর বয়সে নির্মমভাবে হত্যা করে একদল নরপিশাচ। ঘাতকের বুলেটের আঘাতে বাবা-মায়ের লাশের পাশে লুটিয়ে পড়ে শিশু রাসেল। সমস্ত পৃথিবী যেন কেঁপে ওঠে তার আর্তনাদে। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটি রক্তে ভেসে যায়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, ইতিহাসের মহানায়ক স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর একজন প্রিয় লেখক ও ইংরেজ দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের নামানুসারে পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যের নাম রাখেন রাসেল। পরিবারের সবার ভালোবাসার মধ্যমণি ছিল শিশু রাসেল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যখন ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে নরপিশাচরা জাতির পিতাকে হত্যা করে, তখন তারা শিশু রাসেলকেও রেহাই দেয়নি। কান্না বিজড়িত কণ্ঠে শিশু রাসেল বলেছিল, ‘আমি মায়ের কাছে যাব।’ ঘাতক এসে বলল, ‘চল, তোকে তোর মায়ের কাছে দিয়ে আসি।’ এই বলে ঘাতক তাকে ভেতরে নিয়ে যায় এবং ব্রাশ ফায়ার করে। কী নির্মম এই হত্যাকান্ড। ইতিহাসের পাতায় এমন হত্যাকান্ড বিরল।
জন্ম ১ জানুয়ারি, খুলনা । এমবিবিএস পাশ করেছেন শের-ই- বাংলা মেডিক্যাল কলেজ, বরিশাল থেকে । পোস্ট গ্রাজুয়েশন করেছেন অর্থোপেডিক সার্জারিতে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ, ঢাকা থেকে। লেখালেখির শুরুটা কবিতা দিয়ে হলেও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তার অবাধ বিচরণ। সায়েন্স ফিকশন ও ভৌতিক গল্প লিখেছেন প্রচুর। অনুবাদেও সমান দক্ষ । মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাহিত্য নিয়েও কাজ করেছেন অনেক স্বাস্থ্যু বিষয়ক লেখালেখিকে তিনি সাহিত্যের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন । ছাত্রজীবনে সক্রিয় রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন । তিনি শেরই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রসংসদের নির্বাচিত সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন । একই সাথে ছিলেন উক্ত মেডিক্যাল কলেজ শাখার বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ)-এর নির্বাচিত কেন্দ্রীয় প্রচার ও জনসংযোগ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ হেলথ রাইটার্স ফোরাম-এর কেন্দ্রীয় মহাসচিব। প্রথম কবিতার বই একজন স্বপ্নপুরুষের কাছে মৃত্যুর অনুবাদ প্রকাশিত হয় ১৯৮৯ সালে। বাংলা ভাষায় প্রথম দীর্ঘ সায়েন্স ফিকশন কবিতা লেখেন তিনি। স্বাস্থ্য বিষয়ক লেখালেখিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৯ সালে পেয়েছেন আনোয়ারা-নূর পুরস্কার । চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য তাকে ফ্রিলেন্স জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ কর্তৃক এফজেএ অ্যাওয়ার্ড অব ফ্রিডম ২০১২ প্রদান করা হয়। এছাড়াও তাকে মাদার তেরেসা স্বর্ণপদক ২০১২ এবং মে দিবস সম্মাননা ২০১৩ প্রদান করা হয়। রহস্য পত্রিকায় তিনি পাঠকদের স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশ্নের উত্তর দেন এবং উন্মাদ পত্রিকার পরিকল্পনা বিভাগে রয়েছেন। পেশাগত জীবনে তিনি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অর্থেপেডিক ও ট্রামাটােলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন ।