বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব আমৃত্যু স্বামীর পাশে থেকে দেশ ও জাতি গঠনে কার্যকর অবদান রেখেছেন। আমাদের মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান অসামান্য ও অবিস্মরণীয়। বঙ্গবন্ধু ১৪ বার কারাবরণকালীন সময়ে ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তায় স্থির এবং অবিচল থেকে বিচক্ষণতার সাথে প্রতিকুল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। দেশের ঐ দুঃসময়ে বেগম মুজিব শুধু পরিবারের দেখাশোনাই করেননি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বেগবান রাখতে ব্যাপক ভুমিকা পালন করেন। ষাটের দশকে পাকিস্তান-বিরোধী আন্দোলনে বেগম মুজিব প্রতি মুহূর্তেই বঙ্গবন্ধুকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলন সংগ্রামের প্রতিটি স্তরে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব যে কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করেছেন, পৃথিবীর ইতিহাসে তা বিরল ঘটনা। অসমাপ্ত আত্মজীবনী এবং কারাগারের রোজনামচায় বঙ্গবন্ধু তাঁকে সহযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়েছেন। কারণ বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের প্রতিটি পর্বে রেণুই তাঁকে উজ্জীবিত এবং ত্যাগের মহিমায় উদ্বোধিত ও অনুপ্রাণিত করেছেন। তিনি ছিলেন কর্তব্যবোধে অবিচল, ধৈর্যশীল; দেশমাতার কল্যাণ কামনায় নিবেদিত এক মহীয়সী নারী; কোমলে-কঠোরে বেড়ে ওঠা ‘বিজয়ী নারী’। ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের কালরাত্রিতে ঘাতকের বুলেট যখন জাতির পিতার বক্ষ বিদীর্ণ করেছিল, সে-সময় চিৎকার করে ঘাতকের দলকে বঙ্গমাতা বলেছিলেন তাঁকেও মেরে ফেলতে। জীবনসঙ্গীর মরণকালে চিরকালের জন্য তাঁর সহযাত্রী হয়েছেন। ৪৫ বছরের স্বল্প জীবনে রেখে গেছেন কীর্তির সাক্ষর। ভাস্বর হয়ে আছেন তিনি এই বাংলায় বাঙালির জীবনধারায়। ইতিহাসের পথপরিক্রমায় দিন যত গড়াবে ততই তিনি স্বমহিমায় সমাসীন হতে থাকবেন জাতির প্রাগ্রসর জীবনপ্রবাহে।
Title
বঙ্গবন্ধুর সকল প্রেরণার উৎস বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব