এ কাহিনি মূলত পূর্ব আফ্রিকার ইউসুফ নামে এক সোয়াহিলি বালকের মহাকাব্যিক পথপরিক্রমা। সময়টা বিংশ শতাব্দীর শুরু। পূর্ব আফ্রিকার যে অঞ্চলটি এখন তাঞ্জানিয়া-তার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইউরোপীয়রা তখন ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। দখল করছে স্থানীয়দের জায়গা-জমি, ব্যবসা। এমন এক সময়ে ঋণের দায়ে এক দরিদ্র পিতা তার এই সন্তানটিকে বিক্রি করে দেয় এক ব্যবসায়ীর কাছে। যার ব্যবসা ছিল অরণ্যসঙ্কুল অঞ্চল থেকে দুর্গম পাহাড় বা শুষ্ক সমতলসহ সবখানের স্থানীয় আদিবাসীদের সঙ্গে। টাকা-পয়সা নয়, পণ্যের বিনিময়ে পণ্য। পুঁতির মালা, সুতি কাপড়ের মতো সস্তা জিনিসের বিনিময়ে স্থানীয়দের হাতির দাঁত, সোনা ইত্যাদির মতো দামি পণ্যের লোভনীয় লেনদেন। ইউসুফ এই ব্যবসায়ীর কর্মচারী। বাস্তবে দাস বা ক্রীতদাস। এই পথপরিক্রমায় বিভিন্ন আদিবাসী গোত্র, তাদের বিচিত্র জীবনাচরণ, ভিন্নতর মনোজগৎ, অপরিচিত সংস্কৃতি নিয়ে বালকটির রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পাঠককে নিয়ে যায় অচেনা জগতে। ইউসুফের যৌবনে পা রাখা ও প্রেমের উন্মেষ পর্বটিও রোমাঞ্চ-রহস্যে মোড়া। লেখক আবদুলরাজাক গুরনাহ নিজেও সোয়াহিলি। প্রবাসী এই লেখক তাঁর মাতৃভূমির মানুষদের ছবি এঁকেছেন দরদমাখানো কিন্তু বাস্তবতার তুলিতে।