একাত্তরের শরণার্থীদের সম্পর্কে উদাসীনতা ও ছবিতে প্রতিভাত দুর্ভোগ- কোনটিকেই ঠিক করা ছবির কাজ না। বরং চিত্রগুলি আসলে প্রতিষ্ঠিত শক্তির দ্বারা সৃষ্ট গণযন্ত্রণার যৌক্তিকতা পরীক্ষায় মনোযোগ দেয়ার, কারণটাকে প্রতিফলিত করার এবং তা থেকে শেখার জন্য এক ধরণের আমন্ত্রণ। কি দেখি? কি দেখি না? কে কি কারণে ছবি দেখায়? ছবির ভাষ্যের কারণ কি? কারা দায়ী? এটা কি ক্ষমাযোগ্য? এটা কি অনিবার্য ছিল? আমরা যা মেনে নিয়েছি তা কি চ্যালেঞ্জ করা উচিত? ‘দগ্ধশুদ্ধকাল’ বইটিতে এই প্রশ্নগুলোরই উত্তর খোঁজা হয়েছে খানিকটা তত্ত্বের খোলসে। একাত্তরের শরণার্থীদের ছবির প্রসঙ্গটিকে সমকালের আয়নায় বিশ্লেষণ করা হয়েছে মোট আট অধ্যায়ে যাকে সুস্পষ্টভাবেই দু’স্তরে ভাগ করে ফেলা যায়। প্রথম চারটি দৃশ্যের, আর পরের চারটি ভাষ্যের, যা তুলনামূলক দীর্ঘতর এবং সেখানে ছবিগুলোর ভাষ্য, অবস্মৃতি ও অবলুপ্তির রাজনৈতিক ক্ষমতা সম্পর্ক আলোচিত হয়েছে। এখানে ছবির বিষয়বস্তুকে সিগনিফায়ার ধরে তার সিগনিফাইড বাস্তবতা আলোচনা করা হয়েছে। পাশাপাশি সেমিওলজিকাল ধারায় টেক্সট-এর ক্ষেত্রে সিনক্রনিক (বিশ্লেষণমূলক) এবং ডায়াক্রনিক (ঐতিহাসিক) পদ্ধতির প্রয়োগ করা হয়েছে অনুবর্তী আলোচনায়। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরে শরণার্থীদের ছবির ডিনোটেশন ও কনোটেশনের বাস্তবতা বদলে গেছে এবং/কিংবা বদলে দেয়া হয়েছে। পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ আমলে ডিসকোর্সের এই উল্টোরথের কিছুটা ধারণা পাওয়া যাবে বইটিতে।