ভূমিকা যুগ পরম্পরায় ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা রক্ষার তাগিদে রাজনীতি সাহিত্য-সংস্কৃতির জগতে নিজস্ব বলয় তৈরিতে কীর্তিমানদের অবদান অনস্বীকার্য। আতাউর রহমান (১৯২৫–১৯৯৯) এই বীর্তি মানদের অন্যতম। তাঁর জন্ম, শৈশব, কৈশোর, বেড়ে ওঠা, শিক্ষা ও সাহিত্যসাধনায় আত্মনিয়োগ প্রভৃতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, সোঁদা মাটির গন্ধে লালিত, পুষ্টিত ও বর্ধিত মানবপ্রেমী আতাউর রহমান তাঁর জাতি ও সমাজকে বুকে ধারণ করেই ভূমিষ্ঠ হন। সময় হিসেবে তাঁর আবির্ভাবকালকে বলতে হয় দেশের রাজনীতি এবং সাহিত্যজগতে ভাঙাগড়ার কাল। তাঁর কৈশোরেই সংঘটিত হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, তেতাল্লিশের দুর্ভিক্ষ। তারুণ্যে তিনি প্রত্যক্ষ করেন দেশের অগণিত ভুখা মানুষের করুণ চিত্র। যৌবনে তে-ভাগা অন্দোলন এবং ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় যোদ্ধা আতাউর রহমান সাহিত্য এবং রাজনৈতিক জগতে দীক্ষিত হন সাম্যবাদী চেতনা দ্বারা। সমকালের ধনতান্ত্রিক পুঁজিবাদী শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ নির্মাণে হয়ে ওঠেন অনমনীয়। কাব্য রচনা এবং সাহিত্যসাধনার মাধ্যমে সমকালের রাজনৈতিক দর্শনকে তিনি মানবসমাজের কল্যাণব্রতে রূপান্তরিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।