আটপৌরে জীবনের পাঁচিল টপকে পালিয়ে যেতে কার না ইচ্ছে হয়। ‘ক্যাফে বোহেমিয়ান’ সেই পালিয়ে যাবার লুকানো দরজা। ওপাশে ইন্দ্রজালে বোনা তেপান্তরের মাঠ। যেখানে মেঘের ভেলায় চড়ে ফেরারি হতে বাধা নেই কোনো। শুধু লেখকের বাড়িয়ে দেয়া হাতটা খপ করে ধরলেই হলো। সাত সমুদ্দুর তেরো নদী ঘুরে আসা যাবে চোখের পলকেই। মানচিত্রের সীমানা ডিঙিয়ে দেশ-দেশান্তরের বাঁকে হাজার মাইল ছুটলেও ক্লান্তি জেঁকে বসবে না। রোমাঞ্চটা এতই সত্যি। সহজ ভাষায় আনমনে বলে যাওয়া ভ্রমণকাহিনিগুলো পাঠককে কখনো হোঁচট খেতে দেবে না এমনই তার সরল গতি। যাত্রার শুরুটা না হয় বাংলাদেশেই হোক। সেন্ট মার্টিনের কোরাল দ্বীপ আর তার অজানা বাঁকে এক প্রস্থ ঘুরেফিরেই ছুট। তারপর সে সুদূর জার্মানির কোনো এক পাহাড়ঘেরা শহরতলী। সেখান থেকে কয়েক পাতা ওল্টালেই পর্তুগালের রহস্যময় অলিগলি। আবার ফিরতি পথে অস্ট্রিয়ার তুষার ঢাকা আল্পবাখ হয়ে আর স্পেনের ছোট্ট দ্বীপ টেনেরিফে আয়েশী ঢু। পথটা নেহাত কম না। ভ্রমণের ভ‚গোল ঘুরে দু-দন্ড জিরিয়ে নিতে চাইলে রম্য গল্পগুলো রস জোগাবে বেশ। ঘটনা আর অঘটনের ঘনঘটায় গলা ভিজিয়ে নিলে দিব্যি আবার চাঙা, ফুরফুরে। তবে সাবধান, বেদম হাসিতে এক-আধবার বিষম লেগে গেলে সে দায় কেউ নেবে না কিন্তু। সব মিলিয়ে ‘ক্যাফে বোহেমিয়ান’-এর আয়োজন জমজমাট জাঁকালো। পাতার পর পাতা হাসি-আনন্দ আর গল্প-আড্ডার ঠাস বুনন পাঠকের মন খানিকের তরে রাঙিয়ে দিলেই এই আয়োজনের সার্থকতা।