দেহাতীতে যাই- ‘প্রেমিক নাম লেখে আগুনে পুড়িয়ে হাত,/সে হাত স্পর্শ করে অন্য রমণীর বুক’—এই প্রতারণা ও প্রবঞ্চনা নয়, মোহমুক্তির সোপান হোক কবিতার জার্নি। স্বর্গদ্বীপ ও ঝিনুকের গল্প’ কাব্যগ্রন্থে মোস্তফা মোহাম্মদ-এর প্রেম ও বিশ্বাত্মবোধের ভূগোলকে খুঁজে পাই দেশচেতনা ও সমাজভাবনার অন্তর্নিহিত আলোকে। পৃথিবীর মানচিত্রে টিকে থাকা বাংলাদেশ, বাংলাদেশের মানুষ-নদী-নালা-খাল-বিল-পাহাড়-সাগরের মধ্যে মোস্তফা মোহাম্মদ খুঁজে ফিরেছেন কাঙ্ক্ষিত প্রেয়সীকে। কখনো কখনো দেশের প্রাচীর অতিক্রম করে তিনি উড়াল দিয়েছেন অবিভাজ্য শূন্যের ঠিকানায় সীমাহীন অসীমের যাত্রায়। দেহ থেকে দেহাতীতে যাবার সার্বক্ষণিক চিন্তাই ‘স্বর্গদ্বীপ ও ঝিনুকের গল্প' কাব্যগ্রন্থের সারবস্তু। জীবন, জগৎ এবং প্রেমমুগ্ধতায় আবিষ্ট কবিচিত্র কামনা-বাসনার বেড়াজাল ছিন্ন করে এক সৌন্দর্য-ধ্যানমগ্নতা ও ভৌগোলিক অভিযাত্রায় রথের সওয়ার হয়। মোস্তফা মাোহাম্মদের নিজস্ব কাব্যভাষা নির্মাণে এই নির্মোহ যাত্রা ব্যক্তিক ভাবনার বেড়াজাল ছিন্ন করে কাব্যিক সৌন্দর্যের সোপান তৈরি করেছে। প্রতিটি কবিতার অন্তরালে একেকটি গল্প বিদ্যমান—সে বিচারে ‘আখতারুজামান ইলিয়াসের কথাসাহিত্যে জীবন ও সমাজ বিষয়ক সফল পিএইচডি গবেষক মোস্তফা মোহাম্মদ-এর অভিযাত্রাকে বুদ্ধদেব বসুর সাহিত্য-সাফল্যের সঙ্গে তুলনীয় বলে মান্য করি। আকমল হোসেন খোকন সম্পাদক, অর্বাচীন, বাংলা বিভাগ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা। ২২.০২.২০২২