আমাদের বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশ। এদেশের জনবসতি পূর্ণ হওয়ার মানুষের মৌলিক চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই বিশাল জনগাষ্ঠেীর চাহিদাও ব্যাপক। এদেশের মানুষ তার চাহিদা মেটাতে ও ঘরবাড়ি তৈরি করার তাগিদে বন ও বনজ স¤পদ ধ্বংস করছে। এর প্রভাবে আমাদের পরিবেশ মারাত্মভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই বিষয়টি অনুধাবন করে সা¤প্রতিক কালে বৃক্ষরোপন কার্যক্রমকে ব্যাপকভাবে বেগবান করার চেষ্টা করা হচ্ছে। 'বৃক্ষরোপনকে সামাজিক আন্দোলনে পরিনত করছে। স্যোলাল মিডিয়া, রেডিও, টিভিসহ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে- “গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান”। একটি দেশের মোট ভ‚মির ২৫ ভাগ বনভ‚মি বা বৃক্ষ দ্বারা আচ্ছাদিত থাকলে সে দেশের পরিবেশ উন্নত থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের বৃক্ষ আচ্ছাদিত ভ‚মির পরিমান নির্ধারিত হারের থেকে অনেক অনেক কম। এ জন্যেই হয়ত সরকার বৃক্ষরাপেন তথা বনায়নকে বিশেষ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। তবে বনায়ন করতে হলে প্রথম যে উপকরনটি প্রয়াজেন তা হলো উদ্ভিদের বীজ ও সুস্থ সবল চারা। বর্তমান বইটির উদ্দেশ্য হলো- দেশের পরিবেশকে যদি বিপর্যয়কর অবস্থা থেকে উন্নত করতে হয়, তবে দেশে অধিক সংখ্যক নার্সারি তৈরি করা দরকার। দেশের অধিকাংশ লোকই নার্সারি কি, নার্সারি কিভাবে গড়ে তোলতে হবে এবং সামাজিক বনায়নে উন্নত নার্সারির প্রভাব স¤পর্কে তেমন কোন ধারণা নেই। এই বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই উক্ত বইটি রচনা করা হয়েছে। আজ থেকে ৪০ বৎসর পূর্বের নার্সারি এবং বর্তমান সময়কার নার্সারির মধ্যে পার্থক্য ব্যাপক। ক্রমাগত গবেষণার ফলে সুস্থ সবল উন্নত জাতের চারা তৈরির কৌশল বদলে গেছে। পুরানো পদ্ধতি বাদ হচ্ছে, তার পরিবর্ততে আসাছে ডিজিটাল বা আধুনিক পদ্ধতি। নতুন ধারায় কাজ করে ভালো জাতের চারা তৈরি চেষ্টা করছে। গ্রামগঞ্জে অনেক বেকার যুবক আছেন, যাদের ১০/১২ শতাংশ অনাবাদি জমি আছে। তারা আগ্রহী হলে জমি একটু উচু করে উক্ত গ্রন্থটি অনুয়াযী জীবন-জীবিকার পথ তৈরি করতে পারবেন। উক্ত বইটিতে বাংলাদেশের কোথায় কোথায় বন আছে, বন আমাদেরকে কিভাবে প্রভাবিত করছে ইত্যাদি তথ্য বিস্তারিতভাবে প্রদান করা হয়েছে। সামাজিক বনায়নের জন্য কি কি গাছ রোপন করা উচিত এবং পদ্ধতি কি, তাও বই এ বর্ণিত আছে। সামগ্রিক বিবেচনায় বলা যায়। বইটি হয়ত চারা উৎপাদনের জড়িত ব্যক্তি বা বেকার যুবকদের চারা উৎপাদনে উৎসাহিত করবে। পাÐুলিপির বিভিন্ন অংশ তৈরির সময় বাংলাদেশ ন্যাশনাল হাবেরিয়াম এর বিজ্ঞানীদের সহায়তা নেয়া হয়েছে।