ফ্ল্যাপে রেখা কিছু কথা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী অনেক যে গল্প লিখেছেন তা নয়, কিন্তু যা-ই লিখেছেন তা গল্পের মতো মনোরম। তাঁর বলবার কথাগুলো জীবন্ত, ভাষা সব সময়ে চলমান এবং ভঙ্গি মনোমুগ্ধকর। অতিসজজে তিনি পাঠকদের আকর্ষণ করেন এবং তাদেরকে ধরে রাখেন। এই কিশোর সমগ্রের লেখাগুলো পড়ে তরুণ পাঠকদের মনে হবে তাদের জন্য তিনি আরো বেশি করে কেন লেখেন নি। এতে রয়েছে একটি উপন্যাস, ‘বাবুলের বেড়ে-ওঠা,’ কয়েকটি গল্প নিয়ে তৈরি সঙ্কলন, ‘দরজাটা খোলো’; কিশোরদের উপযোগী করে রুপান্তরিত হোমারের অডিসি; সেই সঙ্গে চমৎকার কয়েকটি প্রবন্ধ। তাঁর উপন্যাসের নায়ক বাবুল বাংলাদেশের তিনটি শহরে থেকেছে। বাবুলের বাবা পড়াতেন কলেজে, মা স্কুলে। বাবুল দেখলে সে বয়সে বাড়ছে; আর তার চারপাশের জগৎটা বদলে যাচ্ছে। ঠিক করেছিল সে বাড়ি পালাবে। কিন্তু কত দূর আর যেতে পারে? সে ফিরে এসেছে বাড়িতে। ‘দরজার খোলা’ গল্পগুলো একটা থেকে অন্যটি ভিন্ন। কিন্তু সব কটিতেই নানারকম অবিজ্ঞতা আছে কিশোর-কিশোরীদের। সে সব কাহিনী কিশোর পাঠকদের অপরিচিত মনে হবে না, কিন্তু তারা দেখবে প্রতিটি কাহিনীই একবারে নতুন। হোমারের অডিসি মহাকাব্যটির খ্যাতি জগৎ জোড়া। ওই মহাবাব্যের কাহিনীকে কিশোরদের উপযোগী করে অসাধারন দক্ষতায় বলা হয়েছে। হোমারের অডিসি বইয়ে এই সমগ্রে কয়েকটি প্রবন্ধ আছে জরুরী বিষয়ে লেখা। প্রত্যেকটিতে ভাববার বিষয় রয়েছে। কিন্তু সবকটিই গল্পের মতো সুপাঠ্য। এই সঙ্কলটি হাতে পেয়ে কিশোর পাঠকেরা খুব খুশি হবে। এবং তাদের হাতে এটি তুলে দিতে পেরে অভিভাবকেরা আনন্দ পাবেন। সূচিপত্র *দরজাটা খোলো(গল্প সংকলন) *বাবুলের বেড়ে-ওঠা(উপন্যাস) *হোমারের অডিসি(কিশোররোপযোগী বাংলা রূপান্তর) *ছোটদের উইলিয়াম শেক্সপীয়র *প্রবন্ধ *রবীন্দ্রনাথ অত বড় কেন *ছোটদের নজরুল *মহাকাব্যের কথা *নাটকের কথা *ছেলেদের নাটক : কেন ও কেমন *উপন্যাসের কথা *প্রবন্ধের কথা *কথার কথা * ভাষা, আমার মাতৃভাষা *নিষেধটা কোথায়
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (জন্ম. ১৯৩৬) পেশায় সাহিত্যের অধ্যাপক এবং অঙ্গীকারে লেখক। এই দুই সত্তার ভেতর হয়তো একটা দ্বন্দ্বও রয়েছে, তবে সেটা অবৈরী, মোটেই বৈরী স্বভাবের নয়। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক, অবসরগ্রহণের পর ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রফেসর এমেরিটাস হিসাবে মনোনীত হয়েছেন। তিনি শিক্ষা লাভ করেছেন রাজশাহী, কলকাতা, ঢাকা এবং ইংল্যান্ডের লীডস ও লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে। লেখার কাজের পাশাপাশি তিনি ‘নতুন দিগন্ত’ নামে সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা সম্পাদনা করছেন। তার গ্ৰন্থসংখ্যা আশির কাছাকাছি। তার অকালপ্রয়াত স্ত্রী ড. নাজমা জেসমিন চৌধুরীও লিখতেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন।