চারদিকে বিপুল খুশবু ছড়িয়ে যে পুষ্পসারি গুলিস্তাঁ মাতিয়ে রেখেছে। পথচারীসহ চারপাশের মানুষ পান করছে তার সুভাস আর সৌন্দর্য। বিস্মিত মুগ্ধতায় আবিষ্ট হয়ে আছে পরিবেশ-প্রতিবেশ। তাকে ঘিরে কথাশিল্পীদের বয়ানে কখনও রচিত হচ্ছে মহাকাব্য। কিন্তু তাকে চেনার, জানার, বুঝার ও তার সামগ্রিক জীবন থেকে আলো আহরণের জন্য চিন্তা, চেষ্টা ও তাড়না নেই, আছে কিছু আনুষ্ঠানিকতা। আলোকিত মনীষী আর কীর্তিমানদেরকে অনুসরণ, অনুকরণ ও তাঁদের আদর্শে জীবনগড়ার সার্থকতা অর্জনে আমরা কেন ব্যর্থ হই? অল্পকথায় বলা যায়, মহামানবদের জীবনচিত্র আমরা ভালোবেসে পাঠ করি না। তাদের জীবনে প্রবেশ করি না। কাজেই প্রতিটি প্রজন্ম তাদের আলোয় উদ্ভাসিত হবার টেকসই উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা তীব্র থেকে তীব্রতর। দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে বলি, নিভে যাওয়া দীপশিখা এমন এক উদ্যোগের অন্যতম মাইলফলক। আমরা একইসঙ্গে প্রত্যয়ের সঙ্গে আশ্বস্ত করতে পারি, আপনি স্রেফ কতিপয় মনীষীর জীবনকথা পড়তে বসেননি! এ গ্রন্থে সেরা মানুষদের জীবনচিত্রের সমান্তরালে আপনি বুখারা, সমরকন্দ, ফারগানা থেকে কাশগর, মাওয়ারাউন নাহার থেকে তুর্কি, চীন, স্পেন, আফ্রিকা ও ভারতবর্ষের নানান জনপদে পরিভ্রমণ করবেন। দেখবেন, ইতিহাসের পরিক্রমায় পৃথিবীর বহু অঞ্চলের সমাজ-সংস্কৃতির রূপবৈচিত্র্য। প্রত্যক্ষ করবেন নানান রাজনীতি ও যুদ্ধজয়ের রোমাঞ্চকর ঘটনাপ্রবাহ। আলোচিত কীর্তিমানদের সমকাল, পরিবেশ, পরিপার্শ্ব ও জীবনাধারার সংক্ষিপ্ত অথচ সামগ্রিক চিত্র তুলে এনেছেন বিজ্ঞ লেখক। প্রত্যেকটি লেখার উপসংহারে তিনি পাঠকের জন্য রেখেছেন চিন্তা ও শিক্ষার উপাদান-উপকরণ। দেশের বরেণ্য স্কলার, চিন্তাবিদ, গবেষক ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের লেখা নিভে যাওয়া দীপশিখা-১ শীর্ষক গ্রন্থটি এমন শ্রেষ্ঠ মানুষদের জীবন, কর্ম ও অবদানের চুম্বক অংশে নির্মিত। বহু কীর্তিমান মনীষার আলোঝলমলে জীবনচিত্রের সমাহার ঘটিয়েছেন এ মূল্যবান গ্রন্থে। আল্লাহ আমাদের প্রত্যেকের আমল কবুল করুন।