প্রভা—প্রভা কাবেরি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়ত। কিন্তু এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পাঁচ বছর পর তাদের পাশের বাড়ির ছাদের ছোট্টো একটি ফ্ল্যাটে ভাড়াটে হয়ে আসে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত তরুণ ইঞ্জিনিয়ার সাফকাত। শতাব্দির উজ্জ্বলতর পূর্ণিমারাতে সাফকাত খোলা ছাদে এসে দাঁড়াল। তখন জোছনা তাকে মুগ্ধ করে দিল। সে মুঠোমুঠো জোছনা ধরতে লাগল। সে সময় পাশের বাড়ির ছাদে প্রথম প্রভাকে দেখে সে। প্রভা তাদের বাড়ির ছাদের কিনারে দাঁড়িয়ে একদৃষ্টিতে তাকে দেখছিল। তারপর প্রায় রাতেই তাদের দেখা হয়, কথা হয়। পরবর্তীকালে তাদের মধ্যে গভীর প্রেম হয়ে যায়। নিস্তব্ধ মধ্যরাতে চাঁদের জোছনায় কিংবা নিকষ অন্ধকারে তারা শরীরঘেঁষা দুটি বাড়ির ছাদের কিনারে হাত ধরে দাঁড়িয়ে থাকে, দীর্ঘক্ষণ ধরে তারা গল্প করে। পরিকল্পনা করে একাধিক স্থানে বেড়াতেও যায় তারা। সে সময় প্রভার সাথে সেলফি তুলে মোবাইলের মেমোরি ভরে ফেলে সাফকাত। তারা বিয়ে করার সিদ্ধান্তও নেয়। একসময় সাফকাত কৌতূহলবশত প্রভার ফ্যামিলি সম্পর্কে খোঁজ নেয়। তখন সে জানতে পারে প্রভা নামের তার ভালোবাসার মেয়েটি পাঁচ বছর পূর্বে ভয়ানক এক সড়ক দুর্ঘনায় মারা গেছে। তাহলে সে কার সাথে প্রেম করেছে? সাফকাত বুঝতে পারে, প্রভার অতৃপ্ত আত্মা তার হারানো শরীর ধরে এতদিন তার কাছে এসেছে, গল্প করেছে, তাকে ভালোবেসেছে। তবে এ ঘটনা জানার পর সাফকাত প্রভার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেনি। তার ভালোবাসারও ঘাটতি পড়েনি। তাই সে অশরীরী মেয়েÑ প্রভাকে নিয়ে দূরে কোথাও বাসা নেওয়ার পরিকল্পনা করে। কিন্তু এ ঘটনার পর প্রভা কখনো তার নিজের চেহারা নিয়ে সাফকাতের সামনে দাঁড়াতে পারেনি। কারণ, সাফকাত জেনে গেছে তার শেষ পরিণতির কথা। ফলে নিজের ভুলের জন্য সাফকাত বিমর্ষ হয়ে পড়ে। এসময় কাকতালীয়ভাবে জানা যায় সাফকাতের অফিস কলিগ বিভা মৃত প্রভার ছোটো বোন। আর বিভা একপাক্ষিকভাবে সাফকাতকে পছন্দ করে। সম্ভবত সে সাফকাতকে ভালোবাসে। এই সময় এক রাতে অশরীরী প্রভা ফিরে আসে তাদের ছাদে।