বর্তমানে করোনার ছোবলে সারাবিশ্ব বিপর্যস্ত। ২০২০ এবং ২০২১ সালে এমন একটা সময় গিয়েছে আমাদের জীবনে যে, সারাক্ষণ মৃত্যুচিন্তা লেগে থাকতো। এমনি এক সময়ে অবসরের বিষণœতা নিয়ে একদিন ‘মৃত্যু ভাবনা’ নামে একটি ছোট্ট লেখা আমার নিজস্ব ফেসবুকে পোস্ট করলাম। পড়ে মনে হচ্ছিল লেখাটি মোটেও ভালো হয়নি। তারপরও বারবার বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী এবং আত্মীয়-স্বজনদের মন্তব্য পড়ে মনে হচ্ছিল হয়তোবা লেখাটা তাঁদের কাছে পৌঁছেছে। এভাবে মাঝেমধ্যেই নানাবিধ ভাবনা ও বিষয়কে কেন্দ্র করে বেশকিছু প্রবন্ধ লিখতে থাকি। অনেকটা গবেষণাধর্মী প্রবন্ধগুলো লিখতে গিয়ে অনেক সময় অনেকের লেখা অথবা অনেক সূত্রের সহায়তা নিতে হয়েছে। সরাসরি ধন্যবাদ জানানোর সুযোগ না থাকায় আমি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। লেখালেখির সংখ্যা দিনদিন বাড়তে থাকে। আমি বিশ্বাস ফিরে পাই এই ভেবে যে, লেখা ভালো হোক বা খারাপ হোক অনেকে বিষয়গুলো পড়ছেন এবং আমাকে অনুপ্রাণিত করছেন। এরই এক পর্যায়ে আমার বড়ো ছেলে রাফি আমাকে লেখাগুলোকে সমন্বয় করে বই ছাপাতে অথবা উপন্যাস লিখতে অনুপ্রেরণা দেয়। তার কথাটাকে সে সময় গুরুত্বের সাথে মোটেও নেইনি। এরপর যখন লেখার সংখ্যা আরো বাড়তে থাকলো তখন একদিন আমার বড়ো ছেলের কথা মনে করে চিন্তা করলাম লেখাগুলো একত্রিত করে একটি বই ছাপালে কেমন হয়! সে চিন্তা থেকে আমার এই দুঃসাহসী অভিযাত্রা। আমি আনন্দিত যে ভাষার মাসে দেরিতে হলেও আমার জীবনের প্রথম প্রকাশনা “আমার অবসরের যত ভাবনা” বই আকারে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে । আমি ধন্যবাদ জানাই আমার বড়ো ছেলে ড. আর-রাফি ফেরদৌস জামানকে। তাঁর স্ত্রী সামিরাও আমাকে অনেক সময় অনুপ্রেরণা দিয়েছে, ধন্যবাদ ওকে। আমার ছোটো ছেলে রাশিদ যুক্তরাজ্য থেকে টেলিফোনে আমাকে লেখালেখি করছি কিনা মাঝে মাঝে জানতে চায়, এতে আমি সব সময় অনুপ্রাণিত হই। বই প্রকাশনার ব্যাপারে কার অনুপ্রেরণা কতটা ছিল তা কখনো মেপে দেখিনি। রাত জেগে না ঘুমিয়ে যখন লেখাগুলো লিখতাম তখন এ বিষয়ে বিরক্ত না হয়ে যিনি সম্পূর্ণ সহায়তা করেছেন তিনি আমার স্ত্রী প্রফেসর জান্নাতুল ফেরদৌস রুবি। তাঁকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। কলি প্রকাশনীর কর্ণধার এস. এম. মহিউদ্দিন কলি অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে এবং সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে ফেব্রুয়ারি ২০২২-এর তৃতীয় সপ্তাহে প্রস্তাবটি গ্রহণ করে বইটি ছাপানোর সবরকম ব্যবস্থা করেছেন। তাঁকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। “আমার অবসরের যত ভাবনা” নামে বইটিতে মূলত জীবনযুদ্ধের কথা, ঐতিহাসিক সত্য, পারিবারিক বন্ধন, চারিত্রিক মূল্যবোধ ও ভালোবাসার বিষয়সহ নানারকম বিষয় রয়েছে। বিশেষ বিশেষ দিন উপলক্ষে লেখাগুলো লেখা হয়েছে। লেখাগুলো যদি পাঠকরা পড়েন এবং বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম পড়ে তাহলে আমি মনে করব আমার প্রচেষ্টা কিছুটা হলেও সার্থক হয়েছে। আমি আবারও বইটি প্রকাশনার সাথে সংশ্লিষ্ট যারা বিভিন্নভাবে আমাকে সহায়তা ও পরামর্শ দিয়েছেন তাঁদের সকলের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। পরিশেষে মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ্ তালার কাছে আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা ও শুকরিয়া আদায় করছি। মোঃ রফিকুজ্জামান লালমাটিয়া, ঢাকা।