কাহিনি সংক্ষেপ: ১৯৪৭-এর দেশভাগের প্রাক্কালে খাদ্যশস্য ব্যবসায়ী খালিদ হোসেন স্ত্রী আসমান তারা ও শিশুসন্তান আবিদ হোসেনকে রেখে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। তবে আবিদ হোসেন ছিলেন খুব মেধাবী। সীমিত সুযোগ পেয়েও তিনি ম্যাট্রিক ও আইএ পরীক্ষায় অভাবিত রেজাল্ট করেন। তিনি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। পরবর্তীকালে তিনি পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। ছাত্রজীবনের মতো কর্মজীবনেও আবিদ হোসেন খুব সফল ছিলেন। তবে অবসরগ্রহণের পর দ্রুত তার জীবন বদলে যায়। কারণ, তার ছেলে-মেয়ে দুজনই বিশ্বের দুটি উন্নত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় বাস করে। আবার বছর দুয়েক হলো তার স্ত্রী রুবাইয়াত জাহান দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস, উচ্চ-রক্তচাপ ও স্তন ক্যান্সারে ভুগে শেষ পর্যন্ত মারা গেলেন। তারপর বয়ঃবৃদ্ধ আবিদ হোসেন তার গুলশানের প্রাসাদতুল্য বাড়িতে একঅর্থে একাই বাস করেন। বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক হওয়া সত্ত্বেও সীমাহীন নিঃসঙ্গতা তার বার্ধক্যকে দুঃসহ করে তুলে। তখন জীবনের সমস্ত অর্জনকে তার মিথ্যে বলে মনে হয়। সীমাহীন নিঃসঙ্গতার অভিঘাত মেনে নিতে না পেরে আবিদ হোসেন একসময় তার অধীনস্ত কর্মকর্তা সোহরাব হোসেনের ব্যতিক্রমধর্মী ওল্ড হোমে গিয়ে ওঠেন। সেখানে তিনি পেয়ে যান অবসরগ্রহণকারী তার পরিচিত ও তার অধীনস্ত কলিগদের। তারাও বর্ণাঢ্য-কর্মময় জীবন শেষে নানা কারণে পরিবার থেকে বিচ্যুত। পরবর্তীকালে আবিদ হোসেন সেই ব্যতিক্রমধর্মী ওল্ড হোমের বিস্তৃতির লক্ষ্যে নিজের সমস্ত সম্পত্তি দিয়ে দেন। এমন জীবনঘনিষ্ঠ এক কাহিনির শৈল্পিক গ্রন্থরূপ—একজীবন।