কাহিনি-সংক্ষেপ মধু সুন্দরবনের গভীরে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলে। রাত নেমে এলে সে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। তখন মায়াপরী তার অসুস্থ মেয়ে নীলাপরীর জন্য ঔষধ নিয়ে বনের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল। সে সময় কাঠুরে সন্তান মধু সুন্দরবনের গভীরে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলে চিৎকার করে কাঁদছিল। মধুর কান্না শুনে মায়াপরী নেমে আসে। মধুকে তার বাড়িকে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু মধু তার বাড়ির দিক বারবার ভুল বলে। শেষে বাধ্য হয়ে মায়াপরী তাকে পরীরাজ্যে নিয়ে যায়। পরে এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। মানবশিশুর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে নীলাপরী মধুর হাত ধরে। তখন গুরুতর অসুস্থ নীলাপরী সুস্থ হয়ে ওঠে। বড়ো হয়ে গেলে মধুর আর পরীরাজ্যে থাকার সুযোগ ছিল না। তাকে জ্বিনরাজ্যের অতিথি কেন্দ্রে থাকতে হলো। ফলে নীলাপরী মধুর হাতের স্পর্শ না পেয়ে একসময় আবার গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। নড়াচড়া ও কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলে। সে ক্রমশ বরফ হয়ে যেতে থাকে। তখন তাকে বাঁচাতে মানবসন্তানÑ মধুর হাতের স্পর্শ প্রয়োজন। কিন্তুু তখন মধু জিন রাজ্যের অতিথি কেন্দ্রে অবস্থান করছে। সেখানে যাওয়ার জন্য পরীরানীর সাথে দেখা করে বিশেষ অনুমোদন নেওয়ার সময় ছিল না। তাই মায়াপরী মেয়েকে বাঁচাতে বেপরোয়া হয়ে উঠল। আর একসময় মায়াপরী পরীরাজ্যের প্রহরীর কাজ করেছে। ফলে পরীরাজ্যের গমন-বহির্গমনের গোপন পথগুলো তার চেনা ছিল। মায়াপরী প্রায় বরফ হয়ে যাওয়া নীলাপরীকে তার পিঠে তুলে নিল। পরীরাজ্যের শেষ সীমার গোপন পথ দিয়ে সে নীলাপরীকে নিয়ে পবনরাজ্যে চলে গেল। তারপর মায়াপরী একদিন পবনপরীর পোশাক পরে প্রহরীদের চোখ এড়িয়ে সরাসরি জ্বিনরাজ্যের অতিথি কেন্দ্রে প্রবেশ করল। সেখানে বসবাসরত মানবসন্তান মধুকে সে তার পোশাকের নিচে লুকিয়ে পবনরাজ্যে নিয়ে এলো। নীলার চোখদুটো বরফের মতো পাংশুটে হয়ে গিয়েছে। শরীর বরফের মতো হিম হয়ে গেছে, কোমনীয়তা হারিয়ে ফেলেছে। সে নড়াচড়া ও কথা বলতে পারছে না। নীলার কষ্টে মধুর বুক ফেটে গেল। সে তখনই নীলার হাত স্পর্শ করল। তারপর আস্তে আস্তে নীলার ঘোলাটে চোখে রং ফিরে আসতে থাকল। নীলাপরী কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর তাকে বাঁচানোর জন্য মায়াপরী মধু ও নীলাপরীকে নিয়ে পৃথিবীতে চলে এলো।