‘শঙ্খজীবন’ বিভিন্ন মেজাজের এগারোটি গল্প নিয়ে আমার পঞ্চম গল্পবই। বেশিরভাগ গল্প নতুন হলেও বিশেষ পক্ষপাতের কারণে কয়েকটি গল্পকে কিছুটা পরিমার্জন করে এখানেই প্রথম দেওয়া হলো। কারণ গল্পগুলোর শরীরে সুখ-দুঃখ, আনন্দ-ব্যথা, আশা-বেদনা-রোদন সবই যেমন আছে, তেমনি আছে ভালোবাসার নীরব কোমল সুর। চারপাশের নানা অপূর্ণতার মাঝেও জীবনের প্রশস্তি গেয়ে গল্পগুলো ঠিক শঙ্খের মতো শুভবোধের ইঙ্গিতবাহী হয়ে উঠবে বলে আমার বিশ্বাস। শঙ্খ কি কেবল রোদনই গেয়ে ওঠে করুণ ব্যথাহত সুরে? সেখানে কি কোথাও সুখ থাকতে নেই? না, এমনটা নয়। জীবনের বিন্যাসে সুখ-দুঃখ, ব্যথা-রোদন সবই আছে সমানভাবে। তবে সে রোদন ধীরে ধীরে সুখের প্রাপ্তবাহী হলে কোনো ক্ষতি নেই। শঙ্খে যেমন মিহি স্বরে রোদন বাজে, মুহূর্তে তা আবার হয়ে উঠতে পারে জীবনেরই মঙ্গলধ্বনি। শুচি-শুদ্ধ জীবনের কাছে শঙ্খের প্রয়োজন তাই অনেক বেশি। শঙ্খ-স্বরের ভেতর নেই কোনো অশুভের গোপন সংকেত; কেবলই নিহিত পবিত্রতা যা প্রতিদিন ব্যবহৃত হয়ে জীবনকে শিখিয়ে দেয় ক্ষয় না হয়ে বেঁচে থাকার স্থিরমন্ত্র। তাই প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে হাজারো অমঙ্গল চিন্তা আর অশুভের মধ্যেও বেজে উঠুক শুভবোধের শাণিত সুর। ‘শঙ্খজীবন’ পাঠকের হাতে হাতে পৌঁছে যাক মঙ্গলের বার্তা নিয়ে। তাদের জীবন হয়ে উঠুক শঙ্খের মতো শুদ্ধতম—পরিপূর্ণ এক শঙ্খজীবন ।
মঈনুল হাসান ছড়াকার ও কথাসাহিত্যিক। জন্ম ৪ঠা আগস্ট (বাংলা ২০ শ্রাবণ), ঢাকায়। তবে পৈতৃক নিবাস ফেনী জেলায়। বাবা মরহুম মাে. আব্দুল আউয়াল এবং মা বেগম শামসুন নাহার। নব্বই দশকের শুরুর দিকে কৈশাের পেরােনাে সময়ে বিচ্ছিন্নভাবে লেখালেখির সূচনা। তারপর দীর্ঘ বিরতি। বর্তমানে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে চাদপুরে কর্মরত। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি থেকে প্রকাশিত মাসিক ‘শিশু’ পত্রিকাসহ বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে নিয়মিতভাবে ছড়া ও গল্প প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম কাব্যগ্রন্থ: ফুলকুড়ানি মেয়ে (অমর একুশে বইমেলা ২০১৬-তে অনন্যা থেকে প্রকাশিত)।