ফ্ল্যাপে লিখা কথা চার বছর পর পর এ এক আশ্চর্য সময় আসে, যখন পুরো বিশ্ব কথা বলে এক ভাষায়। চার বছর পর পর এ এক আশ্চর্য সময় আসে, যখন বাকি সব ভুলে গিয়ে ঘোর এক জ্বরে আক্রান্ত হয় পুরো বিশ্ব। ফুটবল-জ্বর। চার বছর পর পর আশ্চর্য একটি মাস আসে, জুন-জুলাইয়ে বাঁধা থাকলেও যেটির নাম হওয়া উচিত অন্য। বিশ্বকাপ-মাস! শুধুই একটি খেলাকে কেন্দ্র করে একটি মাস পুরো বিশ্ব হাসে, কাঁদে, মেতে ওঠে উৎসবে, ভেঙে পড়ে হতাশায়। আর বিশ্বকাপের এক মিলনমেলা। ২০০৬ সালে জার্মানিতে বসা এই মিলনমেলায় শরিক হয়েছিলেন উৎপল শুভ্র। খেলা দেখতে ঘুরে বেড়িয়েছেন জার্মানির শহর থেকে শহরে। তার সাংবাদিকের চোখে শুধু খেলাই দেখেনি, দেখেছে খেলার মাঠের বাইরের বিস্তীর্ণ জগৎ। বিশ্বকাপের বতর্মান দেখেতে দেখতেই কখনো ঘুরে এসেছেন বিশ্বকাপের অতীতে। জার্মানি ২০০৬-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে দেখতে চলে গেছেন ১৯৫০ বিশ্বকাপের মারকানা স্টেডিয়ামে, যখন আগাম বিজয়ের উৎসবে মেতে ওঠা ব্রাজিলকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল উরুগুয়ের গিঘিয়ার গোল। ম্যারাডোনার উম্মাদনা দেখেছেন, ম্যারাডোনাকে নিয়ে উম্মাদনা্ দেখেছেন। পেলেকে দেখার পর পেলে কেন পেলে’র উত্তর খুঁজেছেন। কখনো মিশেল প্লাতিনির সঙ্গে দেখা হয়ে গেছে তার, কখনো বা ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের সঙ্গে। ব্রাজিলের বিদায় টোস্টাওকে কাঁদতে দেখেছেন। পাওলো রসিকে ইতালির জয়ে হাসতে। এই একটি মাস কাছ থেকে দেখেছেন আরও কত অগণন চরিত্র! তাদের সবাই পেলে-ম্যারডোনা নন। বেশির ভাগই সাধারণ মানুষ। বিশ্বকাপ তো শুধু পেলে-ম্যারাডোনা-বেকেনবাওয়ার-প্লাতিনিদেরই নয়, বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে যাওয়া ফ্যানদেরও। তারও আছেন এই বইয়ে। কারা নেই! কী বলা যায় এই বইকে? বিশ্বকাপ ২০০৬-এর দিনলিপি? বিশ্বকাপকে কেন্দ্রে রেখে নির্ভেজাল ভ্রমণকাহিনী? নাকি একেবারেই অন্য রকম কিছু, নির্দিষ্ট কোনো নামে যেটিকে বাঁধা যায় না। পড়ার পর সিদ্ধান্তটা না হয় আপনিই নিন।
Utpal Suvro জন্ম ২৫ পৌষ ১৩৭৩, নেত্রকোনায় মামাবাড়িতে। পুরকৌশলে স্নাতক ক্রীড়া-সাংবাদিকতায় এসেছিলেন নিছকই শখে। সেই শখই পেশা হয়ে গেছে দুই যুগেরও বেশি। শুধু একটা জিনিস একদমই বদলায়নি। শুরুর সেই মুগ্ধতার চোখেই এখনো আবিষ্ট খেলার নেশায়। সাহিত্যের নিবিষ্ট পাঠক, লেখাতেও তার ছাপ খুঁজে পান পাঠকেরা। এক শ ছুইছই টেষ্ট ম্যাচ ছাড়াও কাভার করেছেন ক্রিকেট ও ফুটবল বিশ্বকাপ এবং অলিম্পিক গেমসের মতো বড় আসর। অসংখ্য লেখা প্ৰকাশিত হয়েছে বিদেশের নামী পত্রিকা ও ওয়েবসাইটে । বর্তমানে প্রথম ভালোর ক্রীড়া সম্পাদক। ১৯৯৮ সাল থেকে ‘ক্রিকেটের বাইবেল বলে পরিচিত উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালম্যানাক-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি |