দাদি-নানিদের মুখে আমরা যখন গল্প শুনতে বসতাম, তখন সেই গল্পগুলোর কোন দিকটা আমাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখত? সেই গল্পগুলোতে থাকত সহজ করে বলার ভঙ্গি, সুন্দর শব্দচয়ন, বাক্যের ভেতরে বুদ্ধির ঝলক, কৌতুকরস এবং পরবর্তী অংশের জন্য অপেক্ষা। আধুনিক সময়ে গল্পের সেই ধরন পাল্টে গেছে। এখন আর গল্প বলা হয় না, লেখা হয়। অথচ কারও কারও ধাতটাই এমন যে, তিনি যেন গল্প লিখতে বসে গল্প বলছেন। জনাব মো. হারুনুর রশিদ মিঞার বলা গল্পগুলো ঠিক এমনই মনে হয়। যদিও এগুলোকে ঠিক গল্প বলা যায় না, বরং লেখাগুলোর নাম দেওয়া যাক স্মৃতিগল্প। বেশ বড়ো কলেবরের একটি বই তিনি লিখেছেন। বইয়ের লেখাগুলোর বিষয়বস্তুও বিচিত্র ধরনের, মূলত তাঁর আমলাজীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা তিনি গল্পের ঢঙে বলেছেন অধিকাংশ লেখায়। কিন্তু তা বাদেও রয়েছে আরও বিচিত্র বিষয়ের সন্নিবেশ। মজার বিষয়টি হলো, বিষয়ের এত বৈচিত্র সত্তে¡ও বলার ভঙ্গির কারণে তাঁর কোনো লেখাই বিরক্তির উদ্রেক করে না। মনে হয় যেন একজন খুব পরিচিত মানুষের কাছে তিনি তাঁর জীবনের গল্পগুলো বলে যাচ্ছেন। সহজ ভঙ্গির জন্য লেখাগুলো পড়ে আনন্দ পেয়েছি, আমলাদের মহলের অনেক অজানা বিষয় জেনেছি, যেহেতু লেখক উত্তরাঞ্চলের মানুষ তাই উত্তরাঞ্চলের জনজীবনের অনেক অধ্যায়ও পুনর্পাঠ করা হয়েছে। বইটি যে কোনো পাঠককে মুগ্ধ করবে নিঃসন্দেহে।