সুভাষিত কথকতা অ্যাডভোকেট সুভাষ কান্তি রুদ্রর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ। কাব্যরচনায় তিনি স্বতঃস্ফূর্ত। সারল্যে ভরা তার পদগুলো পড়লে আমাদের ফেলে আসা দিনের কবিয়ালদের কথা মনে পড়ে। কবিয়ালরা মঞ্চে উঠে তাৎক্ষণিকভাবে যে কোনো বিষয়ে পদরচনা করতেন এবং কাব্যতর্কে মেতে উঠতেন। সুভাষ তাঁর কবিতায় কবিয়ালদের সেই আঙ্গিক ফিরিয়ে এনেছেন। বাংলা কবিতার ভাষা, আঙ্গিক, বাক্যগঠন, ছন্দে যে ব্যাপক পরিবর্তন বা বিবর্তন হয়েছে তা তিনি অগ্রাহ্য করে যেন তিনি ফিরে গেছেন গত শতকের চল্লিশ আর পঞ্চাশের দশকে, যখন পল্লী বাংলায় বিভিন্ন মেলায়, খেলায়, উৎসবে কবিগানের আয়োজন হতো। এই একুশ শতকের যান্ত্রিক কোলাহলের ভেতরে তিনি নিয়ে এসেছেন সেই ভাষা, সেই ছন্দ, সেই শব্দ। তবে ভাষা, ছন্দ আর শব্দ ও বাক্যবিন্যাস প্রাচীন কালের হলেও বিষয় কিন্তু সমসাময়িক। এ যেন বর্তমান আর অতীতের এক মেলবন্ধন। তাঁর বিভিন্ন কবিতার শিরোনাম মাস্ক, জ্ঞান, শান্তি, বিভ্রান্তি, ঋদ্ধি। সাধুভাষার শব্দের অতি ব্যবহারে এই সব কবিতায় বর্তমান সময়ের রোগ, শোক, অনুতাপ, জটিলতা, দর্শন উঠে এসেছে। তাঁর কবিতা পড়ে মনে হয় যেন অনেক পুরোনো পাত্রে নতুন পানীয় সরবরাহ করেছেন তিনি।