প্রেম চিরকালীন, প্রেম শাশ্বত এবং হৃদয়ের আকুতিলীন গহন-গভীর অনুভ‚তির সারাৎসার। যখন একটি হৃদয় আরেকটি হৃদয়ের দিকে প্রসারিত হয়, তখন এক ধরনের ঘোরলাগা আকুলতা অন্তর্গত অনুভবকেও প্রকাশ্য করে তোলে। ফলে তার বহুমুখী ব্যঞ্জনায় প্রেম নানা রূপে, নানা স্তরে ভিন্নমাত্রিকতা নিয়ে মানব-জীবনকে অভিনবত্ব দান করে। একজন প্রেমিক বা প্রেমিকা যখন গভীর অনুরাগে একে অপরের প্রতি আকৃষ্ট হয়, তখন প্রেমের যে রূপ লক্ষ করা যায়, সেখানে কেবলই কামনামদির আকর্ষণের তীব্রতা প্রবল এক উন্মাদনা তৈরি করে। আর যে প্রেম সকল জৈবিক কামনার ঊর্ধ্বে শুধুই মানবিক হয়ে ওঠে কিংবা বাৎসল্যের ভিতরে অন্তর্লীন হয়ে থাকে, তখন তাকে আমরা ভিন্নরূপে দেখি। আর তা যদি হয় দেশপ্রেম, তা হলে তার পরিধি সকল বাধা অতিক্রম করে দেশ ও দেশ পেরিয়ে এক নতুন শক্তিতে মহিমান্বিত হয়ে ওঠে। আমরা তা টের পাই, যখন কোনো প্রেমের কবিতার বই কিংবা সংকলন প্রকাশ করি, তখন।br কথাগুলো মনে হলো তাবিয়া রহমান তাসনিয়া সম্পাদিত ‘দুই বাঙলার একশো কবির নির্বাচিত প্রেমের কবিতা’ সংকলনটি পাঠ করে। যেখানেই বাঙালি, তারা যতো দূরেই থাকুন, তাদের প্রতি এক গভীর মমত্ববোধ এবং সকল কাঁটা ধন্য করে ফুল ফোটানোর যে আকুতি, এতে তারই মানবিক ঔদার্য প্রতিফলিত হয়েছে। এই সংকলনের সকল কবিতাই যে শিল্পের বিচারে নান্দনিক হয়ে উঠেছে, তা হয়তো বলা যাবে না। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে সংকলনটি করা, সকল বাধার সীমান্ত অতিক্রম করে ও কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে এদেশের কবিদের সঙ্গে অন্যদেশের কবিদের প্রেমময় বন্ধন সৃষ্টি করা, তাকে সাধুবাদ না দিয়ে উপায় নেই। তাই তাবিয়া রহমান তাসনিয়ার প্রেমের কবিতার এই সংকলনটি সকল বাঙালি পাঠকের কাছে একটি অনুরাগী সঞ্চয়ন হিসেবে সাদরে গৃহীত হবে, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। অসীম সাহা