জনস্বাস্থ্য একটি কম্পোজিট ডিসিপ্লিন, অর্থাৎ এটি কোনো একক বিষয় নয়, বরং এর মধ্যে পড়ে সংক্রামক ও অসংক্রামক মহামারিবিদ্যা, জৈব-পরিসংখ্যান, জনপুষ্টি, স্বাস্থ্য-অর্থনীতি, চিকিৎসা-নৃবিজ্ঞান, আচরণগতস্বাস্থ্য ও যোগাযোগবিদ্যা, স্বাস্থ্য-প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যনীতি ইত্যাদি। বাংলাদেশের সামষ্টিক উপলব্ধিতে ‘স্বাস্থ্য’ বলতে মানুষ ‘চিকিৎসা’ই বুঝে থাকে। প্রতিকারমূলক চিকিৎসার ঊর্ধ্বে উঠে স্বাস্থ্যকে জনগণের অধিকার হিসেবে দেখতে পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে স্পষ্টতই সীমাবদ্ধতা রয়েছে। জনস্বাস্থ্য এমন একটি ডিসিপ্লিন যা স্বাস্থ্য অধিকার অর্জনে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের কথা বলে, বিশেষ পেশাজীবিশ্রেণির বৈষয়িক করালগ্রস্ততার বদলে সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়নের দাবি তোলে। জনস্বাস্থ্যের মূল বক্তব্য হলো, মানুষের দারিদ্র্য, তার সমাজ-বাস্তবতা, তার সংস্কৃতি অত্যন্ত নিবিড়ভাবে তার স্বাস্থ্যসন্ধানকে প্রভাবিত করে। ওষুধ, চিকিৎসা, সেবাপ্রদানকারী--এগুলোকে জনগণের স্বাস্থ্য তথা জনস্বাস্থ্যের একমাত্র অথবা প্রধানতম চাহিদা হিসেবে বিবেচনা করাটা খর্বিত দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ। কোভিড-১৯ অতিমারি যেন আতশী কাঁচের মতো বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের দুর্দশার চিত্রটি বিবর্ধিত করে দেখিয়ে দিয়েছে। বিশ্বের শীর্ষ জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জনস্বাস্থ্যে ডক্টরেট সম্পন্ন করা ড. তৌফিক জোয়ার্দার ময়নাতদন্তের মতো কেটেকুটে উদ্ঘাটন করেছেন বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের বাস্তবচিত্র।