রশীদ এনাম। একজন সৃজনশীল লেখক। সাহিত্যের নানা শাখায় তাঁর ¯^চ্ছন্দ বিচরণ। বিচ্ছিন্নভাবে অনেক দিন ধরে লেখালেখি করলেও নিয়মিত লিখছেন ২০০০ সাল থেকে। বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও সাময়িক পত্রিকায় লেখালেখি করে ইতোমধ্যে একটা পরিচিতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। পেশাগত জীবনে একজন ব্যাংকার হয়েও লেখালেখিতে শ্রম ও সময় দিচ্ছেন আন্তরিকভাবে। বড়োদের জন্য লিখলেও ছোটোদের জন্য গল্প রচনায় তিনি অধিক মনোযোগী ও নিবেদিত। ‘রেললাইনে পাথর ভূত’ গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত গল্পগুলো আমার পাঠের সুযোগ হয়েছে। গল্পগুলো ছোটোদের ভুবনকে আলোকিত করবে নিঃসন্দেহে। যেখানে ফুটে উঠেছে গ্রাম-বাংলার নির্মল সৌন্দর্য, পাহাড়, পাহাড় থেকে নেমে আসা ছড়া, গাছপালা তথা প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা ও পরিবেশ সচেতনতা। প্রাত্যহিক জীবনে নিয়ত ঘটে যাওয়া ঘটনা তাঁর গল্পে প্রকাশ পেয়েছে অকৃত্রিমভাবে। লেখক ভূতের গল্পে ভূতকে এনেছেন ভয়ের প্রতীক হিসেবে নয়, প্রকৃতির বন্ধু হিসেবে। কিছু বিপথগামী শিশু-কিশোরদের অন্ধকার জগৎ থেকে ফিরিয়ে আনতে এবং তাদের মধ্যে মানবপ্রেম জাগ্রত করতে, বিশেষ করে চলন্ত ট্রেনে যারা পাথর ছোঁড়ে, তাদের এই মরণ খেলা বন্ধ করতে। তবে গল্পগুলোতে এক ধরনের ম্যাসেজ আছে, আছে শিক্ষণীয় বিষয়, যা ছোটোদের মানসগঠন ও আনন্দময় জগৎ তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। গল্পগুলো শিশুদের হৃদয়ে মানবীয় মূল্যবোধের ভিত তৈরি করবে এবং নরম মনের ক্যানভাসে এঁকে দেবে সুন্দর মানুষ হওয়ার প্রত্যয়। এধরনের গল্পের মাধ্যমে উদারতা, সহনশীলতা, দায়িত্ববোধ, প্রকৃতি-দেশ ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা জাগ্রত করা ইত্যাদি মানবিক গুণাবলি অর্জনে শিশুদের উৎসাহিত করা দরকার।
রশীদ এনাম,৮ ফেব্রæয়ারী ১৯৮১সালে পটিয়া পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের লালমিয়া গান্ধির বাড়িতে জন্ম গ্রহন করেন। পিতা- ফিরোজ আহমেদ কৃষিবিদ (অবসরপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা) মাতা-জাহেদা আহমেদ (গৃহিনী)। পটিয়া পৌরসভার শেয়ান পাড়া পশ্চিম পটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক সমাপনি এবং ১৯৯৬ সালে আবদুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয় হতে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি, পটিয়া সরকারি কলেজ হতে এইচএসসি, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি বিশ^বিদ্যালয় কলেজ হতে হিসাব বিজ্ঞানে (সম্মান) ও চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ হতে হিসাব বিজ্ঞানে এম কম পাস করার পর কর্মজীবন শুরু করেন বাংলা লিংকের গ্রাহক সেবা কর্মকর্তা হিসেবে, বর্তমানে একটি প্রাইভেট ব্যাংকে প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত। শৈশবে বেড়ে উঠা গ্রামেই। দুরন্ত দস্যিপনায় বেড়ে উঠা ছেলেটি ইসকুল বেলা থেকে লেখালিখি শুরু করেন। কাছের বন্ধুদের আড্ডার প্রাণবন্তমুখ এই তরুণ লেখককে চিনে একজন স্বপ্নবাজ গল্পকার হিসেবে। চট্টগ্রামের একটি দৈনিক পত্রিকায় পটিয়া প্রতিনিধি হিসেবে বেশ কিছুদিন সাংবাদিকতাও করেছেন। ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিষয়ক ফিচার লিখতেন চট্টগ্রামের স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায়। এছাড়াও জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে তাঁর ছোট গল্প ও ফিচার ছাপা হয়। তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত শিশু কিশোর জনপ্রিয় পত্রিকা টইটম্বুরের পরামর্শক পর্ষদের সদস্য ও ঢাকার সমন্বয় সহকারী হিসেবে সম্প্রতি নিয়মিত লিখছেন ইতিহাসের খসড়া ম্যাগাজিনে, শুধু লিখালিখিতে থেমে নেই। সামাজিক দায়বদ্ধতার জন্য ভালোবাসার হাত বাড়িয়েছেন সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের প্রতিও। নিষ্পেষিত পরিবারের শিশুদের জন্য চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী এলাকায় ‘বর্ণের হাতে খড়ি’ নামে একটি হেল্পলেস চাইল্ড ইসকুল করেছেন। বর্ণের হাতে-খড়ি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক লেখক নিজেই। একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবেও বেশ সুনাম রয়েছে বন্ধু মহলের কাছে। পটিয়ায় নিজে প্রতিষ্ঠা করেছেন, মাতাবিস(মাদক ও তামাক বিরোধী সংগঠন)। পটিয়া সৃজনশীল সাহিত্য গোষ্ঠী মালঞ্চের সংগঠক এবং পটিয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের নেজাম স্মৃতি স্পোটিং ক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক। এছাড়াও নিরলসভাবে কাজ করেছেন, প্রথম আলো চট্টগ্রাম জেলা বন্ধুসভায় ও বাংলাদেশ গণিত অলম্পিয়াডে। প্রতিবন্ধীদের অধিকার অর্জনে নিবেদিত সংগঠন বি-স্ক্যান(বাংলাদেশ সোসাইটি ফর চেঞ্জ এন্ড এডভোকেসী নেক্সাস) এর নির্বাহী সদস্য এবং চট্টগ্রাম সমিতি, ঢাকা-র আজীবন সদস্য, চট্টগ্রাম একাডেমী ও বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সদস্য এবং ঢাকা “আজকের প্রজন্ম” সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক । পটিয়া ক্লাবের আজীবন সদস্য ।