গল্পের জীবন নাকি জীবনের গল্প—সমাজমনস্ক গল্পকারের বিবেচনায় কোনটি মুখ্য প্রণিধানযোগ্য, সেই কূটতর্কের জালে না জড়িয়ে কথাশিল্পী রফিকুর রশীদ মানবজমিনের সবুজ শ্যামল চত্বরে পরিব্রাজকের মতো পা ফেলে ফেলে জীবনের অম্লমধুর নির্যাস গ্রহণের মধ্য দিয়ে গল্প রচনা করেন। আর সেই নির্যাসমথিত উপাদানের শৈল্পিক বুননে গড়ে ওঠে জীবনের গল্প, জীবনজয়ী গল্প। অলৌকিক যাত্রা নামের এই গল্পগ্রন্থের প্রতিটি গল্পই নতুন এবং আলাদা। এ স্বাতন্ত্র্য যতটা না গল্পের বিষয় উপজীব্যে, তারও অধিক বহিরঙ্গের প্রকরণে এবং উপস্থাপনের অভিনবত্বে। এইখানে এসে প্রতিটি গল্পই অতিক্রমপ্রয়াসী পূর্ববর্তী গল্পের। এভাবেই ক্রমাগত এগিয়ে যাওয়া, সম্মুখের পাথর সরিয়ে আরো এক ধাপ এগিয়ে পা ফেলা। বিচিত্র সব পাত্রপাত্রী এসে জীবনপাত্র মেলে ধরেছে এ গ্রন্থের পাতায় পাতায়। তারা গল্পকারের হাতের ক্রীড়নক নয়, বরং ক্ষেত্র বিশেষে এই চরিত্রগুলোই নিজেদের স্বাভাবিক বিকাশের স্বার্থে গল্পকারের ভাবনার গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করেছে, আবার নতুন মাত্রায় পথও দেখিয়েছে। এ কারণেই এখানে প্রতিটি পাত্রপাত্রী স্বতন্ত্র আলোকপ্রভায় উদ্ভাসিত এবং জীবন্ত। আর এদের প্রাণসম্পদের জোরেই এ বইয়ের গল্পগুলো হয়ে উঠেছে প্রখর গতিময় এবং জীবনমুখী। সাম্প্রতিক অতীতে দৃশ্যাতীত এক অচেনা ঘাতক মানব সভ্যতার শেকড় ধরে যে প্রবল ঝাঁকুনি দিয়েছে, এ গ্রন্থের নামগল্পে সেই ছবি আঁকতে গিয়ে পাঠককে এক অলৌকিক যাত্রার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেন গল্পকার, যেখানে এসে জাতপাতের সীমারেখা অদৃশ্য হয়ে যায় এবং পাঠক খুঁজে পায় স্বস্তির ঠিকানা। গল্পের জীবন নাকি জীবনের গল্প—সমাজমনস্ক গল্পকারের বিবেচনায় কোনটি মুখ্য প্রণিধানযোগ্য, সেই কূটতর্কের জালে না জড়িয়ে কথাশিল্পী রফিকুর রশীদ মানবজমিনের সবুজ শ্যামল চত্বরে পরিব্রাজকের মতো পা ফেলে ফেলে জীবনের অম্লমধুর নির্যাস গ্রহণের মধ্য দিয়ে গল্প রচনা করেন। আর সেই নির্যাসমথিত উপাদানের শৈল্পিক বুননে গড়ে ওঠে জীবনের গল্প, জীবনজয়ী গল্প। অলৌকিক যাত্রা নামের এই গল্পগ্রন্থের প্রতিটি গল্পই নতুন এবং আলাদা। এ স্বাতন্ত্র্য যতটা না গল্পের বিষয় উপজীব্যে, তারও অধিক বহিরঙ্গের প্রকরণে এবং উপস্থাপনের অভিনবত্বে। এইখানে এসে প্রতিটি গল্পই অতিক্রমপ্রয়াসী পূর্ববর্তী গল্পের। এভাবেই ক্রমাগত এগিয়ে যাওয়া, সম্মুখের পাথর সরিয়ে আরো এক ধাপ এগিয়ে পা ফেলা। বিচিত্র সব পাত্রপাত্রী এসে জীবনপাত্র মেলে ধরেছে এ গ্রন্থের পাতায় পাতায়। তারা গল্পকারের হাতের ক্রীড়নক নয়, বরং ক্ষেত্র বিশেষে এই চরিত্রগুলোই নিজেদের স্বাভাবিক বিকাশের স্বার্থে গল্পকারের ভাবনার গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করেছে, আবার নতুন মাত্রায় পথও দেখিয়েছে। এ কারণেই এখানে প্রতিটি পাত্রপাত্রী স্বতন্ত্র আলোকপ্রভায় উদ্ভাসিত এবং জীবন্ত। আর এদের প্রাণসম্পদের জোরেই এ বইয়ের গল্পগুলো হয়ে উঠেছে প্রখর গতিময় এবং জীবনমুখী। সাম্প্রতিক অতীতে দৃশ্যাতীত এক অচেনা ঘাতক মানব সভ্যতার শেকড় ধরে যে প্রবল ঝাঁকুনি দিয়েছে, এ গ্রন্থের নামগল্পে সেই ছবি আঁকতে গিয়ে পাঠককে এক অলৌকিক যাত্রার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেন গল্পকার, যেখানে এসে জাতপাতের সীমারেখা অদৃশ্য হয়ে যায় এবং পাঠক খুঁজে পায় স্বস্তির ঠিকানা।
রফিকুর রশীদ। জন্ম ১৯৫৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর, মেহেরপুর। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৮৩ সালে সিলেটের এক চা-বাগানে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার হিসেবে শুরু হয় তাঁর কর্মজীবন। মন টেকে না সেখানে। যােগ দেন কলেজ। শিক্ষকতায়। দীর্ঘ ৩৩ বছর শিক্ষকতা শেষে মেহেরপুরের গাংনী কলেজ থেকে তিনি সম্প্রতি অবসর গ্রহণ করেন। নিভৃতে কাব্যচর্চা দিয়ে শুরু হলেও সত্তর দশকের শেষভাগে পত্র-পত্রিকায় গল্প লিখেই তাঁর আত্মপ্রকাশ সাহিত্যজগতে। দেশের উল্লেখযােগ্য প্রায় সব কাগজে বিরামহীন লিখে চলেছেন গল্প আর গল্প, সঙ্গে উপন্যাসও। ছােট-বড় সকলের জন্যে। নির্মোহ চরিত্র চিত্রণ এবং বর্ণনার বিশ্বস্ততাই কথাশিল্পী হিসেবে তাকে এনে দিয়েছে বিশিষ্টতা। ছােটদের জন্য লেখা গল্প এবং উপন্যাসে রফিকুর রশীদ এনেছেন বিপুল বিষয় বৈচিত্র্য। প্রিয় প্রসঙ্গ মুক্তিযুদ্ধ তাে আছেই, বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও কৌতূহলে ভরা বিচিত্র বর্ণে বর্ণিল ছােটদের নিজস্ব ভুবনের আলােকিত উপস্থাপন ঘটে চলেছে তার লেখা শিশু ও কিশাের সাহিত্যে। স্বপ্নজয়ের কথাশিল্পী রফিকুর রশীদ এরই মাঝে অর্জন করেছেন এম. নূরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার, অধ্যাপক মােহাম্মদ খালেদ শিশু সাহিত্য পুরস্কার, চন্দ্রাবতী একাডেমি শিশু ও সাহিত্য সম্মাননা, কাজী কাদের নওয়াজ জন্মশতবর্ষ সম্মাননা, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, অরণি সাহিত্য পুরস্কার, কাঙাল হরিনাথ পদক ও পুরস্কার, বগুড়া লেখকচক্র স্বীকৃতি ও সম্মাননা, সাতক্ষীরা সাহিত্য একাডেমি সম্মাননা, সিকান্দার আবু জাফর সাহিত্য পুরস্কার, দ্বিজেন্দ্র পুরস্কার (ভরত) প্রভৃতি।