বৃহৎ ক্যানভাসের স্বল্প পরিসরে রচিত ‘চিরন্তন শেখ মুজিব’ গ্রন্থটি জাতির পিতা মুজিবুর রহমানের বস্তুনিষ্ঠ জীবনাদর্শের শাশ্বত প্রতিফলন। গ্রন্থটি বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর ভিত্তি করে রচিত হলেও একজন ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকে ছাপিয়ে একজন জাতির পিতা, একটি প্রতিষ্ঠান ও একটি দর্শনের প্রণেতাকে বিশেষ কৌশলে তুলে ধরা হয়েছে। উত্তাল মার্চে বঙ্গবন্ধুর অসহযোগ ও সমান্তরাল রাষ্ট্রব্যবস্থার নজিরবিহীন শাসনের ঘটনা; ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের সামগ্রিক বিশ্লেষণে এর কাব্যিকে রূপের যথার্থতা প্রভৃতি এই গ্রন্থটিতে জ্যোতির্ময় হয়ে উঠেছে। এছাড়া সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রে কীভাবে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে দৃর্বৃত্তায়নের অপচেষ্টা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল, কীভাবে জাতির পিতার জীবনাবসান হয়েছিল, বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার নির্মোহ বিশ্লেষণের মাধ্যমে এর নেপথ্যের কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। হাজার বছরের পথচলায় বাঙালির আত্মপরিচয়ের সীমানা নির্ধারণ করে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক এই ত্রিভুজ পরিমণ্ডলে বঙ্গবন্ধুর প্রগতিশীল দর্শন ‘মুজিববাদ’; মা, মাটি ও মানুষের প্রতি তাঁর গভীর মমত্ববোধের বিভিন্ন দিক যেমন উঠে এসেছে, তেমনি সাম্য-স্বাধীনতায় বিশ্বাসী শান্তির দূত বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী পরারষ্ট্রনীতির ওপর বিশেষ আলোকপাত করা হয়েছে। বাঙালির ভাষা, শিল্প-সংস্কৃতিকে ধারণ করে তিনি এসবকে যেমন মহামানিত্ব করেছেন, সঙ্গে তিনি হয়েছেন পদ্মা-যমুনার সমান্তরালে চিরন্তন বহমান।