বাঙালির জাতীয়-জীবনের বিকাশ, ইতিহাস-ঐতিহ্য, দেশভাগ ও সংখ্যালঘুর জীবন-বাস্তবতা-মনস্তাত্ত্বিক সংকট, মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধের বিচার, অন্তর্ঘাতমূলক রাজনীতি, গণতন্ত্র, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, লুটপাট, নারী নির্যাতন, বিশ্বরাজনীতি, বিশ্বায়ন, দাতাগোষ্ঠী ও উন্নত দেশগুলোর শিল্পায়নের মতো চলমান জীবনবাস্তবতা এবং এসবের ফাঁদে পড়া ব্যক্তিমানুষের অস্তিত্বের লড়াই ইত্যাদি চন্দন আনোয়ারের গল্পের বিষয়। চলমান বাস্তবতায় তাঁর অবস্থান, অযুত জিজ্ঞাসা, বিরোধ-বৈষম্যের বিরুদ্ধে ক্রোধ আর অনিরুদ্ধ প্রতিবাদকে সুঁই-সুতার মতো গল্পের আখ্যান ও ভাষায় নিবিড়ভাবে গেঁথে ফেলেন নিরেট সত্যোচ্চারণে আপোষহীন এই কথাকার। কলকাতার একুশ শতক থেকে (২০১৭) প্রকাশিত ‘নির্বাচিত ৩০’ গল্পসংকলনে পশ্চিমবাংলার লেখক-সম্পাদক সৌমিত্র লাহিড়ী খ্যাতিমান লেখক আবদুশ শাকুরের ভবিষ্যৎবাণীকে (ও বড়ো লেখক হতে পারবে। ওর মধ্যে সম্ভাবনা আছে) যথার্থ বলে উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিশীল এই গল্পকার সম্পর্কে পশ্চিমবাংলার বিখ্যাত কথাশিল্পী সাধন চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘অক্টোবরের অবসরে টানা পড়ে ফেললাম চন্দনের তিরিশটি গল্প। টের পেলাম, দূর জেলা শহরের কোন তরুণ ক্রিকেটার যেন দেশের হয়ে মিরপুরের মাঠে টেস্ট খেলার জন্য দরজায় খটখটাচ্ছে।... উনচল্লিশ বছরের যুবক-লেখকটির কলম যে পাহাড়ি জলপতনের মতো-কোনো বিতর্ক থাকে না।...উভয় বঙ্গের সাম্প্রতিক লেখালেখিতে এমন গল্পের তুলনা খুবই বিরল।