আমার কথা শুনে মিশিকেশ বাবুর স্ত্রী আর তার দুই মেয়ে বড় বড় চোখ করে আমার দিকে তাকালো। রাজকন্যাদের চোখ দুটো অদ্ভুত সুন্দর। যেই চোখগুলো মায়ার জগতে হারিয়ে যেতে বাধ্য করে। মেয়ে দুটোর চোখ তাদের মায়ের চোখের মতো হয়েছে। তিনটা মানুষের ছয়টা মায়াবী চোখ অদ্ভুত এক অবাক বিস্ময় নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মায়াবী চোখগুলোর মায়া উপেক্ষা করে বললাম, কি! এমন বললাম।যার জন্য এমন বড় বড় চোখ করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে! আমার কথা শুনে অবাক হলেন! তাহলে, বলি। গালি দিতে না পারলে সবার প্রথম কারা মারা যাবে, জানেন? সবার আগে মারা যাবে, রিকশাওয়ালারা। রিকশাওয়ালারা একজন আরেকজনের রিকশার সাথে বাধিয়ে দিবে। কিন্তুু গালি দিতে না পেরে হার্ট ফেল করে মরে যাবে। তারপর কারা মারা যাবে, জানেন? ব্যবসায়ীরা। তারা তাদের দোকানের কর্মচারীদের গালি দিতে না পেরে হার্ট ফুট্টুস করে বন্ধ হয়ে পটল তুলবে। তারপর আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন গালি দিতে না পেরে টুস করে মরে যাবে পুলিশের লিষ্টে থাকা ভয়ংকর সন্ত্রাসীরা তাদের এন্ট্রি পার্টির লোকদের গালি দিতে না পেরে চ্যাগাইয়া মরে পড়ে থাকবে। গালি দিতে না পেরে দেশের মানুষগুলোর কি অবস্থা হবে, চিন্তা করে দেখছেন! গালির অভাবে মানুষ যাবে মরে, দেশ থাকবে চ্যাগাইয়া পড়ে। সবচেয়ে ভয়ংকর কথা বলি। এরা তো গালি দিতে না পেরে মরবেই। আর কারা মারা যাবে, জানেন? মা বাবারা। মা বাবারা তাদের ছেলে মেয়েদের গালি দিতে না পেরে ক্যাক।মানে,ডাইরেক্ট উপরে।এ্যাম্বুলেন্স আসার সময়ও পাবে না। তার আগেই সুইচ অফ। বুঝলেন! আমার কথা শুনে মিশিকেশ বাবুর দুই রাজকন্যা হাসতে হাসতে তার মাকে জড়িয়ে ধরলো। মিশিকেশ বাবুর স্ত্রী তাদের হাসির সাথে সাথে হাসতে লাগলেন। তিনি তার শাড়ির অঁাচল মুখে দিয়ে হাসি আটকানোর চেষ্টা করতে লাগলেন। কিন্তুু একবার যখন কোথাও হাসি শুরু হয়ে যায়। তখন সেখানে হাসি আটকে রাখা সম্ভব হয় না। আমার সামনে তিনজন হো হো করে হাসছেন। আমি অপলক দৃষ্টিতে তাদের হাসি দেখছি। মিশিকেশ বাবুর স্ত্রী, দুই মেয়ে হাসছে। তারা তাদের হাসি আটকে রাখতে পারছে না। এদিকে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি, ১২ বাজতে আর মাত্র ৫ মিনিট বাকী। মিশিকেশ বাবুর বাসা থেকে আমাকে বের হতে হবে। বাসার বাইরে সেন্টু আমার জন্য অপেক্ষা করছে। পকেটে থাকা মোবাইলটা চালু করতে হবে। মোবাইলটা চালু করা এখন বিশেষ দরকার। একজনকে ফোন দিতে হবে।