বাংলাদেশের অত্যন্ত ঘটনাবহুল সময়ে এ কে এম শহীদুল হক পুলিশ বিভাগের বিভিন্ন গুরুত্বর্পূণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর বত্রিশ বছর কর্মজীবনের নানান পর্যায়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে দাগী অপরাধীদেরকে কাছ থেকে দেখেছেন, সাক্ষী হয়েছেন ঐতিহাসিক সব ঘটনার। এই সব ঘটনার কোনো কোনোটির যেমন রয়েছে জাতীয় স্তরে তাৎপর্য, কোনো কোনোটি আমাদের সমাজ বাস্তবতাকে গভীরভাবে চিনতে সাহায্য করবে। পুলিশ বিভাগের সাথে জনপ্রতিনিধি, জনপ্রশাসন, সামরিক বাহিনী এবং বিচার বিভাগের সম্পর্ক, সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং ব্যক্তিত্বের সংঘাতের মুখোমুখি হওয়ার অকপট বিবরণও তিনি এই গ্রন্থে দিয়েছেন। বিশেষ করে জঙ্গিদের ভয়ংকর আত্মপ্রকাশ ও দমনের পর্বটিতে তিনি পুলিশের প্রধান হিসেবে নীতি নির্ধারণ ও পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করে জঙ্গি দমনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। লেখকের কর্মজীবনের অর্জনের মাঝে রয়েছে কমিউনিটি পুলিশিংসহ বহুবিধ সফল ও সৃজনশীল উদ্যোগের কৃতিত্বও। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ তাঁরই উদ্যোগে চালু হয়েছে। এইসব অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতের ইতিহাসবিদ ও গবেষকদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে। পুলিশ সদস্যরা তো বটেই বাংলাদেশের ইতিহাস, রাজনীতি ও প্রশাসন বিষয়ে উৎসুক যে কোনো সচেতন পাঠক গ্রন্থটি আনন্দ নিয়ে পাঠ করতে পারবেন। সূচি শেষ থেকে শুরু: সবচেয়ে পুরাতন কথা-বিদায় পুলিশ-পূর্ব জীবন পুলিশ জীবন শুরুর পর্ব অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পর্ব পুলিশ সুপার পর্ব অতিরিক্ত ডিআইজি পর্ব ডিআইজি পর্ব অতিরিক্ত আইজিপি পর্ব আইজিপি পর্ব কমিউনিটি পুলিশিং নিয়ে আমার যত কাজ জাতিসংঘ মিশন পর্ব পরিশেষ: পুলিশ হবে জনতার? লেখকের পুলিশ হিসেবে কর্মজীবনের বিভিন্ন সময়ের ছবি পরিশিষ্ট
Title
পুলিশ জীবনের স্মৃতি : স্বৈরাচার পতন থেকে জঙ্গি দমন
এ কে এম শহীদুল হক বাংলাদেশের সাবেক পুলিশ অফিসার, যিনি পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ছিলেন। তিনি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানাধীন নরকলিকাতা গ্রামের এক মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৮৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ কল্যাণে এমএসএস ডিগ্রি অর্জন করে একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে এলএলবি এবং একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমবিএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে ১৯৮৬ সালে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। ডিআইজি হিসেবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, রাজশাহী রেঞ্জ এবং চট্টগ্রাম রেঞ্জে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশে কমিউনিটি পুলিশিং এর অন্যতম প্রবর্তক হিসেবে তিনি কমিউনিটি পুলিশিং ধারণাকে জনগণের কাছে জনপ্রিয় করে তোলেন। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে তিনি ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ থেকে ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সালে আমেরিকার নিউ জার্সি রাজ্যের মেয়র তাকে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা প্রদান করেন। বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) এ ভূষিত হয়েছেন। তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করে জাতিসংঘের শান্তি পদকেও ভূষিত হন। তার রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে-'Police and Community with Concept of Community Policing’, ‘কমিউনিটি পুলিশিং কি এবং কেন’, ‘বাংলাদেশ পুলিশ সারগ্রন্থ , 'Community Policing Concept', Aims and Objectives’ এবং ‘Bangladesh Police Hand Book' ইত্যাদি।