"বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা"বইটির ভূমিকা: প্রফেসর মযহারুল ইসলাম ছিলেন বহুমুখি প্রতিভাধর এক মানুষ। কৃতীছাত্র, ধীমান অধ্যাপক, তুখােড় বুদ্ধিজীবী ও যশস্বী লেখক ও গবেষক হিসাবে তার খ্যাতি ছিলাে বিপুল। সেই সঙ্গে জীবনের শেষ পর্বে তিনি শিল্পপতি হিসাবে যে উদ্ভাবনাময় সাফল্যের পরিচয় দেন তা ছিলাে বিস্ময়কর। ফলে শিক্ষাবিদ ও লেখক হিসাবে তিনি সমাজে যে উচ্চস্থান লাভ করেছিলেন তা সমুজ্জ্বল রেখেও এক নন্দিত শিল্পপতি হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। ড. মযহারুল ইসলাম তাঁর লেখক-সত্তায়ও ছিলেন এক সৃজনমুখর সব্যসাচী লেখক। কবি গল্পকার ঔপন্যাসিক অন্ধকার ড. ইসলাম সাহিত্যের নানা শাখায় যে ইর্ষণীয় সিদ্ধির পরিচয় রেখে গেছেন তা আমাদের মুগ্ধ, বিস্মিত করে। প্রফেসর ইসলাম ছিলেন রাজনীতি সচেতন এবং বাংলা ও বাঙালির মহান ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এক অঙ্গীকারদীপ্ত কলমযােদ্ধা। এই লক্ষে তাঁর লেখালেখির সংখ্যা সামান্য নয়। ইতােমধ্যে প্রকাশিত তার নানা বইয়ে এই ধারার লেখাজোখার দীপ্তি পাঠক ম মনে নতুন আলাের প্রক্ষেপনে সক্ষম হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব' শীর্ষক বিপুলায়তনের গ্রন্থ ছাড়াও এতদ্বিষয়ক, বাঙালি জীবনে এয়ী ও অন্যান্য চিন্তা (২০০৬) কৌতুহলী পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে বলেই আমরা মনে করি। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা' শীর্ষক বর্তমান গ্রন্থটিও এই ধারায় এক নব সংযােজন। উল্লখ্য যে, ড. ইসলাম ছিলেন এক বিপুল-প্রজ লেখক। আর তিনি যেন ক্লান্তিহীন ছিলেন বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও বাঙালি সংস্কৃতি বিষয়ক লেখালেখিতে। তাঁর আকস্মিক তীরােধানের পর তাঁর লেখালেখির ফাইলপত্র ঘেঁটে আমরা বহু অগ্রন্থিত লেখা উদ্ধার করতে সক্ষম হই। সেইসব লেখা থেকে বাছাই করে আমরা পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন গ্রন্থ প্রকাশের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। তারই অংশ হিসাবে ইতােপূর্বে তাঁর কবিতার অনুবাদ গ্রন্থ, বাঙালি জীবনে ত্রয়ী এবং বর্তমানে বের হলাে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং রবীন্দ্রনাথ নজরুল এ বাঙালি সংস্কৃতি। বইগুলাে পাঠকপ্রিয় হলেই ড. ইসলামির আত্মা পরম সন্তোষ লাভ করবে।
জন্ম ৪ এপ্রিল ১৯৫৮, পৈতৃক নিবাস চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার উত্তর সলিমপুর, ফৌজদারহাট। জন্ম, বেড়ে ওঠা ঢাকাতে। কৈশোর থেকে প্রত্যক্ষ করা জাতীয়তাবাদী, বাম প্রগতিশীল আন্দোলন-সংগ্রামে নিজেকে যুক্ত করেছেন, সচেতনভাবে। রাজনীতি সচেতন সক্রিয় সংস্কৃতিকর্মী হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছেন। নাট্য-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের দীর্ঘ ধারাবাহিকতায় মতাদর্শিক রাজনৈতিক চেতনায় সকল মানুষের অধিকার ও সুযোগের সাম্য প্রতিষ্ঠার সংস্কৃতির নানাবিধ কর্মকাণ্ডে যুক্ত। নিয়মিত কলাম, নিবন্ধ, প্রবন্ধ লেখেন জাতীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক এবং সাময়িকীতে। সাহিত্য-সংস্কৃতির ত্রৈমাসিক নতুন দিগন্ত’র নির্বাহী সম্পাদক। তাঁর সকল কর্মকাণ্ডের মূলে রয়েছে মতাদর্শিক অঙ্গীকার এবং সেই অঙ্গীকারেই লেখালেখি।