ইসলামের মূল উৎস এবং পূর্ণাঙ্গ সংবিধান হল আল কুরআনুল কারীম; কিন্ত তা এমন তাত্ত্বিক কিতাব, যা পারঙ্গম করতে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের প্রয়োজন হয়। রাসুল স. হলেন এর ব্যাখ্যাকার এবং তাঁর কর্মবহুল জীবন হল এই কুরআনের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ। তাই কুরআনের পরে ইসলামের দ্বিতীয় উৎস হল-রাসুল স. এর হাদীস। মূলত কিতাবুল্লাহ ও হাদীসে রাসুল স. দ্বীনে ইসলামের মূলভিত্তি। কুরআনের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের প্রয়োজন না থাকলে আল্লাহ তার প্রিয় নবীর উপর এই দায়িত্ব অর্পন করতেন না। প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম আওযায়ী রহ.(মৃ.১৫৭ হি:) তিনি বলেন-হাদীস কুরআনের প্রতি ততটা মুখাপেক্ষী নয়,কুরআন যে পরিমাণের মুখাপেক্ষী হাদীসের প্রতি।(তালিকুস সাবীহ) অর্থাৎ কুরআনের মর্ম অনুধাবনের জন্যে হাদীসের সাহায্য নেয়া ছাড়া কোন গন্তব্যই নেই। যেমন গৃহ নির্মাণের জন্যে শুধু ঘরের ম্যাপ সামনে থাকলেই হয় না;বরং পদে পদে ইঞ্জিনিয়ারের নির্দেশনার প্রয়োজন হয়। তাই চোখ বন্ধ করেই বলি- পবিত্র কুরআনের পরেই হাদীসের অবস্থান। ইহার অস্বীকারকারী, অমান্যকারী নিঃসন্দেহে কাফের। ইসলামী শরীয়তে হাদীসের অবস্থান কতটুকু; তা সূর্যের মত স্পষ্ট। কিন্তু তা বুঝতে হলে, পড়তে হলে, বিশ্লেষণ করতে হলে তারই আবশ্যকীয় কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে যেগুলোকে বিজ্ঞজনের মতে ইলমে হাদীস বলে। ******** দারুল উলূম দেওবন্দের শায়খুল হাদীস আল্লামা মুফতি সাঈদ আহমাদ পালনূপরী রহ. বুখারীর ক্লাস শুরু করার পূর্বে লাগাতার 15দিন যাবত হাদীস, ইলমে হাদীস, ফিকহুল হাদীস ও বুখারী শরীফ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করতেন। হযরত রহ. এর আলোচনাগুলো তার লিখিত বুখারীর ব্যখ্যাগ্রন্থ ‘তুহফাতুল ক্বারী শরহে বুখারী’র মধ্যে সংকলন করা হয়েছে। বক্ষমান বইটিতে হযরতের সেই গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যগুলো তুলে ধরা হয়েছে। বাংলায় যার নাম দেয়া হয়েছে ‘সহীহ বুখারী; ফিকহুল হাদীস ও উলূমুল হাদীস।’ বইটি হাদীস ও ফিক্বহের প্রত্যেক ছাত্র, শিক্ষক, গবেষক তেমনি ইমাম-খতীব, মুফতি, মুহাদ্দিস ও মুফাসসিরের ইলমী পাথেয় যোগাবে। [লক্ষণীয়: এটি তুহফাতুল ক্বারীর মুকাদ্দামার বঙ্গানুবাদ। মূল গ্রন্থের কাজ চলমান। ধীরে ধীরে 30 পারা বুখারী 30 খণ্ডে প্রকাশিত হবে ইনশাআল্লাহ।]