দীর্ঘদিন পত্রিকা সম্পাদনায় জড়িত থেকে আমি লক্ষ্য করেছি আমাদের দেশে তরুণ যারা লেখালেখিতে আসেন, তারা গদ্য লেখার পরিশ্রমে পরাঙ্মুখ। গদ্যে অনীহা থেকে, অনাগ্রহ থেকে কিংবা অপছন্দ থেকে বোধকরি এমনটি হচ্ছে। একজন লেখক কোন মাধ্যম বেছে নেবেন সেটা তার অন্তর্নিদেশেরও বিষয় বৈকি। কেউ গদ্য লেখার পরিশ্রমে নিজে থেকে উদ্যোগী দেখলে আমি আশাবাদী হই ব্যক্তিগতভাবে। আমার বিশ্বাস আমাদের প্রচুর গদ্য লেখার পরিশ্রমী হাত দরকার। সেটা নতুন সাহিত্যের জন্য ততোধিক জরুরি, জরুরি যুগের দাবিতেও। তরুণ সাংবাদিক হোসেন শহীদ মজনু কয়েকটি গল্প নিয়ে যে গল্পের বইটি বের করতে যাচ্ছেন তা আমাকে আশাবাদী করেছে। আমি তার গল্পগুলো পড়েছি- তার গদ্য চলিষ্ণু, পাঠককে টেনে নিয়ে যাবে। গল্পগুলো ছোটগল্প চরিত্রের তবে আমি একে মিনি গল্প বলে বোধ করেছি। যদিও মিনি গল্প, অনুগল্পের চেয়েও পরিসরে অনেক ছোট হয়- একটা পোস্টকার্ডে এটে যায়। মিনি গল্পের কথাটা উল্লেখ করলাম এ জন্য যে, এ গ্রন্থের গল্পগুলোর চরিত্র পাঠক অনুধাবন করতে পারবেন। গল্পগুলোর বেশির ভাগই তরুণ সাংবাদিকের দিনযাপনের আলেখ্য- সেটা এ বইয়ের আরেকটি উল্লেখ করার মতো বৈশিষ্ট্য। তরুণ এ সহকর্মীর লেখা গল্পগুলো আমার ভালো লেগেছে। বর্তমান সময়ের পাঠক যদি পছন্দ করেন তাহলেই সেটা লেখকের সার্থকতা বলে বিবেচিত হবে। হোসেন শহীদ মজনুর গদ্য লেখার সাহসকে স্বাগত জানাই। আশা করি, তার গল্প পাঠকের ভালো লাগবে। সাইফুল আলম সম্পাদক, দৈনিক যুগান্তর ও সাবেক সভাপতি, জাতীয় প্রেস ক্লাব
Hossain Shohid Majnu ছোটগল্পকার, কবি হোসেন শহীদ মজনুর প্রধান পরিচয়– তিনি সাংবাদিক। পেশায় সাংবাদিক হলেও প্রথম নেশা- লেখালেখি। ২০০৯ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'প্রতিধ্বনি কমরেড' প্রকাশিত হয়। এরপর ২০১১ সালে প্রকাশিত হয় গল্পগ্রন্থ 'ভূত অথবা ভবিষ্যতের গল্প'। যৌথ সম্পাদনায় 'ভাষাচিত্র নির্বাচিত ছোটো গল্প' বের হয় ২০১৯ সালে। ২০২০ সালে তার সম্পাদিত 'ছোটদের মজার মজার ভূতের গল্প' শিশু-কিশোরদের মধ্যে সাড়া ফেলে। সম্পাদনা করছেন ছোটোকাগজ বাংলানামা। এছাড়াও তিনি দেশের প্রায় প্রতিটি জাতীয় দৈনিকেই অনিয়মিতভাবে লেখালেখি করেন। লেখকের দ্বিতীয় নেশা- ভিজ্যুয়াল মিডিয়া। সেজন্যই চলচ্চিত্র নির্মাণকাজে জনপ্রিয় অভিনেতা-পরিচালক তৌকীর আহমেদের সহকারী পরিচালক হিসেবে যুক্ত ছিলেন প্রায় এক বছর। দেশের একাধিক জাতীয় দৈনিক ও অনলাইনে সাংবাদিকতার পাশাপাশি ড. কাজল রশীদ শাহীনের রচনা ও নূরুল আলম মিল্কীর পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক ‘লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে’ সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ নাটকে ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেন তিনি। একই লেখক ও পরিচালকের ‘বৈদেশী’ নামের আরেকটি টিভি নাটকেও সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় যুগ্ম বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন হোসেন শহীদ মজনু। লেখকের জন্ম ১৯৭৫ সালের ১৩ মে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ঠোটারপাড়া গ্রামে। বাবা বদরুদ্দোজা বিশ্বাস ও মা জাহানারা খাতুনের ৬ সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। ২০০৭ সালের ১৫ অক্টোবর সাবিকুন্নাহার রীতার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির দুটি সন্তান– বড় মেয়ে শাহরীন মেধা ও ছেলে শাহনাম স্নিগ্ধ। সাংবাদিকতা, লেখালেখি ও সম্পাদনা করেই বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে চান; কারণ তার ধারণা এসব ছাড়া অন্য কোনো কাজ তিনি তেমন পারেনও না!