“ভবিষ্যৎ নাড়া দেয়া কবিতা ওবায়েদের কবিতা ভিন্ন ধরনের কবিতা। তার কবিতার দিকে তাকালে এবং মনে মনে পড়লে আমি নিজেই একটা বিরাট ভূখণ্ডের মধ্যে প্রবেশ করি। আমি তার সঙ্গে হাঁটতে থাকি একটা রূপান্তরিত পৃথিবীর দিকে। তার কবিতা পড়লে তার কবিতার দিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করে। তার শব্দগুলি মৃদু অথচ ভায়োলেন্ট। তাকে বলা যায় ভায়োলেন্সের পেশাদার। তিনি কবিতার দিক থেকে পেশাদার, তার পেশাদারিত্ব হচ্ছে : আশা। আমাদের খরচ হয়ে যাওয়া এবং ভাঙ্গা শরীর থেকে একটা নতুন পৃথিবী নিশ্চিতভাবে তৈরি হবে। আমরা কি দেখে যেতে পারব? পারব কি পারব না, জানি না, কিন্তু নিশ্চিতভাবে জন্মাবে পরিবর্তিত পৃথিবী, যেখানে আমরা রেখেছি আমাদের জীবন, শরীর, যেখান থেকে দেখা দেবে: ভালোবাসা এবং যন্ত্রণা, দুটো শব্দ একসঙ্গে কুচকাওয়াজ করতে থাকবে, বলতে থাকবে: শুশ্রূষার বিপরীতে, ভিন্ন এক জীবন আছে। সে-জীবন হচ্ছে ব্যক্তিকতা, ব্যক্তিগত ইন্দ্রিয়গ্রাহ্যতা এবং সৃজনশীল অলসতা। আমি ওবায়েদ আকাশের মানবিক কল্পনার ভক্ত; কল্পনার মধ্যে আছে মৃদুতা এবং এনার্জি, এবং গভীরতা, শক্তি আছে বাস্তব পৃথিবীকে শিল্পের মধ্যে বদলে দেয়ার।”
:: বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর শালুক, মিথ সংখ্যা, বর্ষ ১৩, সংখ্যা ১৪, ফেরুয়ারি ২০১২, পৃষ্ঠা: ৭০৫-৬ *** “ওবায়েদ আকাশের কবিতায় আমি একটি প্রবাহমানতা পাই। তার কবিতার চিত্রকল্পটা বিস্তৃত। তার অল্প শব্দে অনেক কথা বলার একটি সহজাত দক্ষতা আছে। তার উপমা ও উপস্থাপনা চমৎকার। তাছাড়া তার কবিতায় একজন কথাসাহিত্যিকের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়। কপাট বন্ধ করে সে কবিতা লেখে না। তাই তার কবিতার মধ্যে একটা আহ্বান থেকে যায়। তার কবিতায় আমাদের স্থানীয়তা আছে, ইতিহাস ও সংস্কৃতির চিত্র আছে। আর এদিক বিবেচনায় মার্কেজের সাথে তার চিন্তার কিছুটা মিল আছে। যদিও মার্কেজ কবি ছিলেন না, কিন্তু একজন কবির কল্পনাকে তিনি ধারণ করতেন। ঠিক তেমনি একজন কথাসাহিত্যিকের কল্পনাও ওবায়েদ তার কবিতায় ধারণ করেন।”
:: সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম শালুক, মার্কেজ সংখ্যা, বর্ষ ১৫, সংখ্যা ১৭, সেপ্টেম্বর ২০১৪ পরিচিতি ওবায়েদ আকাশের জন্ম ১৩, জুন ১৯৭৩; রাজবাড়ী জেলার সুলতাপুর গ্রামে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। পেশা গণমাধ্যমের চাকরি। প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা : কবিতা, সম্পাদনা, অনুবাদ, প্রবন্ধ সব মিলিয়ে ৪৩টি। এইচএসবিসি কালি ও কলম পুরস্কারসহ দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন।
ওবায়েদ আকাশের জন্ম ১৯৭৩ সালের ১৩ জুন; রাজবাড়ী জেলার সুলতানপুর গ্রামে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। পেশা : গণমাধ্যমে চাকরি। বর্তমান কর্মস্থল : দৈনিক সংবাদ। প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা : কবিতা, অনুবাদ, গল্প, প্রবন্ধ, সম্পাদনাÑ সব মিলিয়ে ৩৭টি। জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি প্রকাশ করেছে তাঁর কাব্য সংকলন ‘উদ্ধারকৃত মুখমÐল’ (২০১৩)। কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়েছে একাধিক গ্রন্থ। দেশ-বিদেশ থেকে পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন একাধিক। উল্লেখযোগ্য : এইচএসবিসি-কালি ও কলম তরুণ কবি পুরস্কার ২০০৮। কলকাতা লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্র পুরস্কার ২০০৯। লন্ডন থেকে প্রাপ্ত সংহতি লিটারারি সোসাইটি বিশেষ সম্মাননা পদক ২০১২।