মোশাররফ হোসেন খান আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। আশির দশকের অমসৃণ কাব্যভূমি থেকে ধ্রুবের মতো উজ্জ্বলতা নিয়ে বাংলা সাহিত্যের নাবিক হয়ে তিনি হাল ধরেছেন। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তিনি এখন স্থিত এবং একজন বরেণ্য কবি। কবি খান আমাদের অহঙ্কার। গর্বিত সবুজ বাংলার মহান কবি ব্যক্তিত্ব। আশির দশক থেকে এ পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের এই সুদীর্ঘ পথপরিক্রমায় তাঁকে নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা কম হয়নি। দেশজ গণ্ডি পেরিয়ে বহিঃবিশ্বেও তিনি একজন পাঠকপ্রিয় ঐতিহ্যবাদী কবি হিসেবে স্বীকৃত। তাঁর কাব্যের স্বাতন্ত্র্যতা সাহিত্য বোদ্ধাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি। সাহিত্য সমালোচক কবি ও গবেষক আব্দুল মান্নান সৈয়দ, বিশিষ্ট দার্শনিক ও সুসাহিত্যিক দেওয়ান মোহম্মদ আজরফ, নজরুল গবেষক ও বিশিষ্ট সাহিত্য বোদ্ধা, সমালোচক, সম্পাদক শাহাবুদ্দীন আহম্মেদ, কবি ড. আশরাফ সিদ্দিকী ও বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদসহ প্রয়াত এবং বর্তমান বহু গুণী, পণ্ডিত, কবি, গবেষক ও সুসাহিত্যিক তাঁর সাহিত্যকর্ম নিয়ে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা করেছেন। তাঁদের আলোচনার সারৎসার হলো কবি মোশাররফ হোসেন খানের ভিন্ন মাত্রিক কাব্য ধারা, নিরীক্ষাধর্মী উপমার ব্যবহার, শব্দ চয়ন, বিষয়বস্তু নির্বাচন, উপমার সার্থক ব্যবহার, ছন্দের বহুমাত্রিক পরীক্ষা তাঁর কাব্যকে করছে আলোড়িত ও শক্তিশালী আর সুষমামণ্ডিত। ড. ইয়াহিয়া মান্নান যথার্থই বলছেন- “জনজীবন সম্পৃক্ত বিষয়াবলি তাঁর কাব্যচর্চার নিত্যসঙ্গী। তিনি মানব জীবনের সুতীক্ষè প্রেমবোধে নির্মাণ সমকাল ও ঐতিহ্যকে ধারণ করেছেন তাঁর সাহিত্যকর্মে।” কবি খানের বহু কবিতায় যেমন মানব জীবনের প্রেমবোধ, নিসর্গ, সমকাল ও ঐতিহ্যকে ধারণ করেছেন তাঁর সাহিত্যকর্মে। তার কবিতায় যেমন মানব জীবনের প্রেমবোধ স্পষ্ট রূপ লাভ করেছে তেমনি মানুষের প্রতি ঘৃণাবোধও জাগ্রত হয়েছে সুস্পষ্ট ভাবে। তাঁর সাক্ষাৎকার কবিতা থেকে আমরা স্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারি।