এ গল্প অনেক অনেক দিন আগের। যে সময় মানুষের মনে হিংসে ছিলো না, যে সময় কেউ কারো ক্ষতি করতো না, দয়ামায়া আর ভালোবাসায় ভরা ছিলো মানুষের মন- এ গল্প সে সময়ের। সেই সুন্দর সময়ে এক দেশে এক সওদাগর ছিলেন। রাজপ্রাসাদের মতো বিশাল ঝলমলে একটি বাড়ি ছিলো তার। হাতিশালে হাতি ছিলো। ঘোড়াশালে ঘোড়া ছিলো। হীরে-মুক্তো, চুনি-পান্না যে কতো ছিলো, তার হিসেব ছিলো না- সওদাগরও তা জানতেন না। তিনি ছিলেন খুব সৌখিন। বাণিজ্য করার জন্যে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াতেন। আর সে সব দেশ থেকে সুন্দর সুন্দর জিনিস কিনে নিয়ে আসতেন। এ কারণে চোখ জুড়ানো সব জিনিসপত্রের ঝলমল করতো তার বিশাল বাড়ি। মানুষ হিসেবেও খুব ভালো ছিলেন এই সওদাগর। সৎ আর দয়ালু ছিলেন তিনি। সবাই তাই খুব ভালোবাসতো তাকে। সেই দয়ালু সওদাগরের তিন মেয়ে ছিলো। মানুষ সুন্দর মেয়েদের সাথে পরীর তুলনা করে, কিন্তু সওদাগরের মেয়েরা ছিলো পরীর চেয়েও সুন্দর। ওদের গায়ের রং ছিলো দুধে-আলতায় মেশানো। চুল ছিলো হাঁটু ছুঁইছুঁই লম্বা। আর অমাবস্যা রাতের মতো কালো ছিলো সেই চুলের রঙ। ঠোঁট দুটো ছিলো গোলাপের পাপড়ির মতো টুকটুকে লাল। চোখ ছিলো পটোল চেরা। হীরের মতো ঝিকমিক করতো ওদের দাঁত। সওদাগরের মেয়েরা যখন হাসতো, মনে হতো মুক্তো ঝরে ঝরে পড়ছে। কথা বলতো মিষ্টি সুরে। সেই কণ্ঠস্বর শুনে মনে হতো ভোরের পাখি গান গাইছে। অপূর্ব সুন্দর মেয়েদের দিকে তাকিয়ে সওদাগরের মন ভরে যেতো। নিজের জীবনের চেয়েও তিনি বেশি ভালোবাসতেন তার মেয়েদের।
Enayet Rasul স্বনামখ্যাত শিশুসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাসির আলী ও বেগম মেহের উন নিসা’র দ্বিতীয় পুত্র। ১৯৫৩ সালের ১২ জুন বিক্রমপুরের ধাইদা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। লেখাপড়া ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ওপর। ১৯৬৫ সালে একটি ছড়া লেখার মাধ্যমে লেখালেখির জগতে বিচরণ শুরু হয়। প্রথম ছড়াটি ছাপা হয় ‘জুনিয়র রেডক্রস’ পত্রিকায়। সব বয়সী পাঠকদের জন্যে লেখেন এনায়েত রসুল। তবে মূলত শিশুসাহিত্যিক। শিশুসাহিত্য সষ্টিতে তাঁর দায়বদ্ধতা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। এনায়েত রসুলের পাঠকপ্রিয় বইগুলোর মধ্যে এক আকাশ মেঘ একপশলা বৃষ্টি, ‘পোড়োবাড়ি রহস্য', ডক্টর নিপুর এক্সপেরিমেন্ট', ‘নিঝুমগড় ভয়ঙ্কর’, ‘ভয়ঙ্করের হাতছানি’ বাতিঘরের বুড়ো’, ‘অন্যরকম বুবাই’, ‘ব্ল্যাকহোল’ ‘ভাষার কথা লেখার কথা’, ‘মেঘপাখি’ ‘মিশন উইথ মাউন্টব্যাটেন, ‘বাঙালির জাতিসত্তা ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, ‘বিজয়ের ছবি', 'মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে’ ‘ভূতসমগ্র', ‘কিশোর গল্পসমগ্র ‘চিচি’, ‘খেয়ালি রাজার দেশে, ‘অপি ও চেঙা বেঙা’ ‘পিকু ও ছেলেধরা', ফুলবালিকা', এক মায়ের গল্প' ইত্যাদি। ‘এক মায়ের গল্প’টির জন্য তিনি ১৯০৮ সালে মীনা মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন । বর্তমানে এনায়েত রসুল জাতীয় দৈনিক আমার দেশ’-এ সহ-সম্পাদক পদে কর্মরত। সেইসঙ্গে ছোটদের পাতা ‘এক্কাদোক্কা' পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন।