বর্তমান বাংলাদেশে বলার চাইতে লেখা অনেক বেশি সমস্যা সংকুল হয়ে উঠেছে। টকশো’তে যে কথা বলা যায়, ঠিক সেটাই লিখে ফেলা অনেক সময়ই হয়ে ওঠে না। টকশোতে যেহেতু সরাসরি কথা হয় তাই তাদের কাছে কোনো কথা আপত্তিকর বলে মনে হলে বাধা দেন হয়তো তারা, কিন্তু কোনো আলোচকের বক্তব্য নিয়ে খুব কঠোর জবাবদিহিতার মুখে পড়েন না উপস্থাপক কিংবা প্রযোজক। কিন্তু একটা কলাম যেহেতু প্রকাশিত হবার আগে একজন সম্পাদকের টেবিল পার হতে হয় তাই জবাবদিহিতার প্রশ্নে সম্পাদক অনেক বেশি সচেতন থাকেন। কলাম হচ্ছে মতামত, একজন লেখকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ থাকে তাতে। এটা জানা কথা, কিন্তু এই দেশে প্রায় সব পত্রিকা রীতিমত লিখে দেয়, সেখানে প্রকাশিত সকল মতামত লেখকের নিজস্ব, যার সাথে সেই পত্রিকার কোনো সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ আমার মতামত নিয়ে যদি ক্ষমতাসীনরা নাখোশ হয়, তাহলে সেটার জন্য আইনি বা অন্য কোনো ঝামেলা হলে আমারই হবার কথা। মজার ব্যাপার হলো এরপরও মতামত ছাপতে বহু বাছবিচার করেন সম্পাদকরা। তাদের এই সতর্কতা কিংবা ভীতি তৈরি হবার প্রেক্ষাপট আছে নিশ্চয়ই। যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে লেখালেখির সঙ্গে আছি তাই জানি যে লেখা কয়েক বছর আগেও সম্পাদকের দরজা পেরিয়েছে কোন বাধা ছাড়াই সেই লেখাই এখন বহু কাটছাঁটের পরও ছাপতে দ্বিধা বোধ করেন অনেকেই।