এই বইয়ে যে লেখাগুলো ছাপা হয়েছে, সেগুলো থেকেই জুনোর রাজনৈতিক জীবন ও মতাদর্শ সম্পর্কে বেশ কিছুটা জানতে পারবেন পাঠকরা। তবে জুনোর রাজনৈতিক জীবনের কয়েকটি দিক তুলে ধরলে রাজনীতিতে তাঁর ব্যতিক্রমী ভূমিকা স্পষ্ট হবে বলে আশা করি। জুনো অন্তর থেকেই সকল বাম রাজনৈতিক শক্তির ঐক্য কামনা করতেন। কমিউনিস্টদের দেশীয় অথবা আন্তর্জাতিক বিভক্তিতে তিনি অসন্তুষ্ট ছিলেন। এছাড়া তিনি চীনপন্থি হিসেবে পরিচিত হলেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে চীনের বিরোধিতা তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি। চীনের এই ভূমিকায় তিনি আজীবন বেদনাহত ছিলেন। ‘চীনের চেয়ারম্যান, আমাদের চেয়ারম্যান’ এই শ্লোগানটিকেও তিনি ‘একেবারেই গ্রহণযোগ্য’ মনে করতেন না। এছাড়া তিনি স্পষ্টই বলেছেন, সত্তরের নির্বাচনের সময় ‘ভোটের আগে ভাত চাই’ শ্লোগানটি সঠিক ছিল না। তাঁর প্রশ্ন ছিল, সে সময় কার কাছে ভাত চাইছি আমরা? রাজনীতির বাইরেও সব সময়ই তিনি নেতিবাচকতা পরিহার করে ইতিবাচক দৃষ্টিতে জীবনকে দেখতে পছন্দ করতেন। যখন ডাক্তাররা জুনোকে জানালেন যে, তাঁকে আমরণ বা আজীবন ডায়ালাইসিস চালিয়ে যেতে হবে তখন তিনি ‘আজীবন’ শব্দটিকেই পছন্দ করেছিলেন। কারণ তাঁর মতে ‘আজীবন’ শব্দের মধ্যে জীবনের গন্ধ পাওয়া যায়’। তাঁর এই বক্তব্য জীবনের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিকেই প্রতিফলিত করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পক্ষের সব শক্তির ঐক্যও তাঁর কাম্য ছিল।