শিক্ষা একটি বিনোদন, মানসিক আন্দোলন, চিন্তার খেলা। ছোট-বড়ো সকলেরই সখের ঘুড়ি থাকার কথা ছিল বিদ্যাচর্চা। ইবনুল কাইয়্যূম জাওযী (রহ.) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ মিফতাহু দারি আস-সায়াদাহ’তে লিখেছেন, “অজ্ঞতা হলো এমন একটি বৃক্ষ যেখান থেকে সমস্ত অনিষ্টতার জন্ম নেয়।” আর এই অজ্ঞতাকে দূর করতে প্রয়োজন বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা। পড়া এবং বইয়ের সাথে জীবন কাটানোর মাধ্যমে একজন মানুষ তার জীবনের সাথে আরো জীবনকে যুক্ত করতে পারে। সেটা হতে পারে তার এই পৃথিবীতে জীবদ্দশায়, যেখানে সে তার এই জীবনকে অধিক বেশি আনন্দের সাথে ইতিবাচকভাবে এবং ফলপ্রসূভাবে উপভোগ করতে পারবে। আর পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার পর তিনি পাবেন আরেকটি জীবন, কারণ সেই ব্যক্তিটি যে জ্ঞান রেখে যাবেন সেটা দ্বারা মানুষ উপকৃত হবে এবং তাঁর মৃত্যুর পরে মানুষ তাঁকে স্মরণ করবে এ যেন আরেকটি জীবন। একটি শিশুকে পড়াশোনায় আগ্রহী করে তোলার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় ও বসন্ত ঋতু হলো প্রথম থেকে অষ্টম বছর পর্যন্ত। এ সময় তার সঠিক পরিচর্যা হলে তাকে মহা বৃক্ষ বানাতে আর খড়ি পোহাতে হয় না। যে পরিবারের পিতা-মাতা কখনো বই ধরে দেখে না, যে ঘরে পড়াশোনা নিয়ে কোনো কথা হয়না, যে সন্তান তার পিতা-মাতার হাতে কখনোই বই দেখে না, যার ঘরে একটি ছোট হলেও লাইব্রেরী নেই! সে সন্তান বড়ো হতেই তার কাছ থেকে আপনি কি করে আশা করেন যে “সে পড়াশোনায় মনোযোগী হবে”? বই প্রেমী হয়ে উঠবে?! এটি নিছক অলীক কল্পনা। তাই শিশুকে পাঠক হিসাবে গড়ে তুলতে হলে এ বিষয়গুলোই সবার আগে অগ্রাধিকার দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে, তবে একজন শিশু প্রকৃত পাঠক হিসাবে নিজেকে গড়ে তোলার প্রয়াস পাবে। আর এ বিষয়টিই আলোচ্য বইয়ের বাস্তবতার আলোকে তুলে আনা হয়েছে নিখুঁতভাবে।