লেখক সিভিল সার্ভিসের একজন স্বনামধন্য আমলা হিসাবে তার ম্যাজিষ্ট্রেট জীবনের স্মৃতিকথা লিখতে গিয়ে বারবার নিজেকে কাঠগড়ায় দাড় করিয়াছেন। অনিয়ম আর দুর্নীতির সাথে আপোষহীন মনোভাব নিয়ে তিনি একাই লড়েছেন। সেখানে তিনি ছিলেন একক সৈনিক বা 'one man army'। বাংলাদেশে আশির দশকের প্রশাসনিক ভাঙ্গাগড়া ও ডামাডোলের প্রায় পুরো সময়টিতে তিনি পার্বত্য চট্রগ্রামের দুর্গম এলাকা থেকে সমতল ভূমির বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় কর্তব্যের ডাকে ছুটে বেড়িয়েছেন। মাঠপর্যায়ে, তার সাড়ে চার বছরের ম্যাজিস্ট্রেটের জীবনে তিনি ৭ বার বদলী হয়েছেন; কখনও এই বদলী তার জন্য ছিল কাঙ্খিত কখনও এটা ছিল অনভিপ্রত বা অবমাননাকর। আত্মজীবনীর ছত্রে ছত্রে তার বিদগ্ধ মনের যে ছবি ফুটে উঠেছে তাতে তৎকালীন প্রশাসনিক পরিবর্তন, জনগণ ও আমলাতন্ত্রের সর্ম্পকের বিভিন্ন দিক প্রতিভাত হয়েছে। তাছাড়া তৃণমূল পর্যায়ে প্রশাসনিক কর্মকান্ড ও বিচারকার্য পরিচালনার বিভিন্ন দিক নিয়ে তার সুললিত বর্ণনা পুরো বইটিকে সুখপাঠ্য ও আর্কষণীয় করে তুলেছে। আমলাতন্ত্রের বহুচর্চিত কথা “ট্যাক্টফুল” এর ব্যবচ্ছেদ তিনি সফলভাবেই তার বক্তব্যে তুলে ধরেছেন। “পাহাড় থেকে সমতলে”-তার লেখা স্মৃতিকথা আগামী প্রজন্মের সিভিল সার্ভিসের নবীন সদস্য অথবা আগ্রহী পাঠকের জন্য প্রশাসনের বহু আলোচিত আশির দশকের ডামাডোল ও ভাঙ্গাগড়ার ইতিহাস জানতে সহায়ক হবে বলে আশা করি।