সুজয় ও তিথি। ছোট বেলা প্রাইমারী স্কুলে দু’বছর একসাথে পড়েছে। খেলার সাথীও ছিল। তখন থেকেই তিথির অদ্ভূত সুন্দর দুটো চোখ সুজয়কে টানতো। তিথিরও ভালো লাগতো সুজয়কে। কিন্তু বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে একদিন সুজয়ের জীবন থেকে হারিয়ে যায় তিথি। কিন্তু তাদের বিশ^াস ছিল একদিন দেখা হবেই। সময় গড়িয়ে যায়। একসময় সুজয় ছাত্ররাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়ে। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটে। একদিন একই ট্রেনে সামনাসামনি বসে ঢাকায় আসে সুজয় ও তিথি। কিন্তু কেউ কাউকে চিনতে পারে না। অবশেষে ঢাকায় ছাত্রইউনিয়ন অফিসে আবার দেখা হয়। ঘটনাচক্রে তখন পরস্পরকে চিনতে পারে তারা। ফিরে যায় ছেলে বেলায়। তারা কেউ কারো সম্পর্কে জানেনা। কিন্তু বুঝতে পারে তারা একজন আরেকজনকে পাগলের মত ভালবাসে। একসময় তিথি ঢাকা বিশ^দ্যিালয়ে ভর্তি হয়। সুজয় বাম রাজনীতি ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে সার্বক্ষণিক ভাবে জড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হয়। পঁচাত্তর সালে বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকান্ডের পর কারাগারে যেতে হয় সুজয়কে। তিথি অপেক্ষা করে। কবে তাদের স্বপ্ন সফল হবে। একদিন পাশ করে বেরোয় তিথি। চোখে ঘর বাঁধার স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন কী বাস্তবেরূপ নেবে? লেখক পুরো উপন্যাসে তুলে ধরেছেন সেই সময়ের বাম রাজনীতির গতিপ্রকৃতি ও বিভিন্ন অজানা কথা। তৎকালীন ছাত্ররাজনীতি। তিথিও সুজয়ের ভালোবাসার একটা একটা বাস্তবচিত্র এঁকেছেন সুন্দর ও সাবলীল গল্প বলার ছন্দে। সত্তর দশকের বাম রাজনীতির ঘটনা প্রবাহ সুন্দর ভাবে উঠে এসেছে তার লেখায়। এই গল্প তার একার নয়। আরো অনেকের মনের ভেতর জেগে আছে এই দিনগুলো। তিথির ভালোবাসায় সিক্ত এই গল্প সকলের। হয়তো নষ্টালজিয়ায় আক্রান্ত। তবে এই লেখায় পাঠকরা হয়তো খুঁজে পেতে পারেন তাদের সযতেœ লুকিয়ে রাখা অতীতের দিনগুলো।