জীবনানন্দের ছােটগল্পে সমাজবাস্তবতা ও ব্যক্তিজীবনের অভিজ্ঞতার সম্পর্ক দেখানাে ছাড়াও আছে ছােটগল্পের সাথে নান্দনিকতা, চিত্রকল্প ও ভাষাপ্রতিমা, রাজনীতি ও অপশব্দের সম্পর্ক। এই বইয়ে তথাকথিত আলােচনার পরিপ্রেক্ষিত রচনা করেননি, বরং বলা যায় মননশীলতার পরিবেশ গড়ে দিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই পাঠ্য-পুস্তকের আলােচ্য সীমায় আবদ্ধ রাখেননি, যদিও ছাত্রছাত্রী, গবেষক, শিক্ষক, জীবনানন্দ-প্রিয় পাঠক-পাঠিকা-এদের কাছে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এই বইয়ের প্রতিপাদন বিষয়। এই বইয়ে তিন/চারটি প্রবন্ধ বিশেষ বিশেষ লিটল ম্যাগাজিনে ও জীবনানন্দ বিষয়ে প্রবন্ধের বইয়ে ইতিপূর্বে স্থান পেয়েছে। ইতিপূর্বে প্রাবন্ধিক সুখেন্দ্র ভট্টাচার্যের ছােটগল্পের উপর দুটি প্রবন্ধের বই প্রকাশিত হয়েছে, ১) ছােটগল্পের সামাজিক সূত্র; ২) ছােটগল্পের পর্ব-পর্বান্তর। এছাড়া তিনি একজন দায়িত্বশীল সম্পাদক আন্তর্জাতিক ছোটগল্প নামে ছত্রিশ বছর অতিক্রান্ত চতুর্মাসিক লিটল ম্যাগাজিনের, এখনও স্ব-মহিমায় পুরস্কার প্রাপ্ত (পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি ও কলকাতা লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্র) এই লিটল ম্যাগাজিনটি চলছে এবং তিনি নিজেও ছােটগল্পকার হিসেবে রামমােহন স্মৃতি পুরস্কারে সম্মানিত ও সংবর্ধিত হয়েছেন। একুশ শতক এর আগে সুখেন্দ্র ভট্টাচার্যের ৫১টি ছােটগল্প প্রকাশ করেছে। মূলত গাব্রিয়াল গার্সিয়া মার্কেজ, ফ্রানৎস কাফকা ও মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছােটগল্প ছাড়াও সুখেন্দ্র ভট্টাচার্যের প্রিয় বিষয় জীবনানন্দ দাশের ছােটগল্প পাঠ। তিনি নিজেও একজন প্রথাবিরােধী ছােটগল্পকার, সেই কারণেই হয়তাে তাকে মুগ্ধ করেছে জীবনানন্দের ছােটগল্প, এই মুগ্ধতারই ফসল জীবনানন্দের ছােটগল্পে জীবনানন্দ। তিনি জীবনানন্দের ছােটগল্পে জীবনানন্দকে খুঁজতে চেয়েছেন।